শ্রমিক ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট, শিপিং ব্যাহত

অনলাইন ডেক্স: চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে কনটেইনার পরিবহন বিঘ্নিত হওয়ায় সময়মতো জেটি ছাড়তে পারেনি বেশ কয়েকটি জাহাজ। এতে নতুন আসা জাহাজগুলোর জন্য জেটি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, ফলে বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সারি দীর্ঘ হচ্ছে।

সীতাকুণ্ডে চট্টগ্রাম ডিসি পার্কে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার পরিবহনে ব্যবহৃত প্রাইম মুভার অপারেটররা তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করেন। যদিও গত শুক্রবার রাত থেকে পণ্য পরিবহন পুনরায় শুরু হয়েছে, তবুও বন্দর ইয়ার্ড ও বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোতে (আইসিডি) কনটেইনার জট কমপক্ষে আরও দুই সপ্তাহ থাকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ধর্মঘটের কারণে ছয়টি জাহাজ নির্ধারিত সময়ে জেটি ছাড়তে পারেনি, যার ফলে—
চারটি জাহাজ প্রত্যাশিত ৯০০ টিইইউ রপ্তানি কনটেইনার ও ১,০০০ টিইইউ খালি কনটেইনার না নিয়েই বন্দরের জেটি ছেড়েছে।
অপেক্ষমাণ কনটেইনারগুলো যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
গতকাল সকাল পর্যন্ত বন্দরের বহির্নোঙরে ১৪টি জাহাজ অপেক্ষায় ছিল, যা এক থেকে তিন দিন ধরে আটকে রয়েছে।

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল— এই ব্যস্ততম দুটি টার্মিনালে ৮০% ধারণক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেছে।
ধর্মঘটের সময় প্রতিদিন আড়াই হাজার টিইইউ কনটেইনার খালাস করা সম্ভব হয়নি। এর পাশাপাশি, নতুন করে তিন দিনে আরও ৩,০০০ টিইইউ কনটেইনার জমা হয়েছে।
বন্দরের নির্বিঘ্ন কার্যক্রম চালাতে কমপক্ষে ৪০% জায়গা খালি রাখতে হয়, যা এখন সংকটের মুখে।

দেশের ১৯টি আইসিডিতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ কনটেইনার জমে গেছে।

সাধারণত এসব আইসিডিতে ৭,০০০-৮,০০০ টিইইউ রপ্তানি কনটেইনার থাকে, কিন্তু ধর্মঘটের কারণে তা ১৪,০০০ টিইইউতে পৌঁছেছিল।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার জানান, ধর্মঘট শেষ হওয়ার পরেও আইসিডিতে ১২,০০০ টিইইউ কনটেইনার অবশিষ্ট রয়েছে।

বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসতে আরও দুই সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ধরনের অচলাবস্থা পুরো সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলে, যা দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।