সমঝোতা ভেস্তে, ভোটে ফিরছে বিজিএমইএ নির্বাচন

প্রতিবেদক: তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ গঠনের আলোচনায় শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হয়নি। ফলে সংগঠনের সাধারণ সদস্যরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে বিজিএমইএর দুই প্রধান জোট—ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ—সমঝোতায় না পৌঁছানোর কারণে নির্বাচনের পথেই এগোচ্ছে সংস্থাটি।

এরই মধ্যে বিজিএমইএর নির্বাচন ঘিরে ‘ঐক্য পরিষদ’ নামে একটি নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে এই জোট ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫টি পদের বিপরীতে মাত্র ছয়টি প্রার্থী দিয়েছে, ফলে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যেই। এ দুই জোটই পূর্ণাঙ্গ প্যানেল জমা দিয়েছে।

জানা গেছে, কিছুদিন ধরেই ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছিল। ঢাকার একটি হোটেলে শেষ দফার বৈঠকেও সমঝোতার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফোরাম নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রাথমিকভাবে ৯৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও দুই প্রধান জোট থেকে অনেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে বর্তমানে প্রার্থী সংখ্যা ৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

বিজিএমইএর নির্বাচন বোর্ডের সচিব মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, ৩৫টি পদের বিপরীতে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হবে। ৩১ মে ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ১,৮৬৫ জন, যাঁদের মধ্যে ঢাকায় ১,৫৬১ জন এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন। এবারের নির্বাচনে শুধু সচল কারখানার উদ্যোক্তারা ভোটার হয়েছেন।

দীর্ঘদিন বিজিএমইএর নেতৃত্বে থাকা সম্মিলিত পরিষদ এবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। অতীতে এই জোটের নেতৃত্বে ছিলেন টিপু মুনশি, আতিকুল ইসলাম, আবদুস সালাম মুর্শেদী, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং সিদ্দিকুর রহমান। তবে বর্তমানে সিদ্দিক ছাড়া বাকি সবাই বিভিন্ন মামলায় কারাগারে। গত বছর বিজয়ী হওয়ার পর সভাপতি হয়েছিলেন এস এম মান্নান, যিনি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যান। এরপর নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয় এবং অবশেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

ফোরাম এবার মাহমুদ হাসান খানকে প্যানেল লিডার করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তিনি এর আগে সংগঠনের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নতুন ও অভিজ্ঞ উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে তারা প্যানেল গঠন করেছে এবং সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন এড়িয়ে সাধারণ ভোটারের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অন্যদিকে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার হয়েছেন মো. আবুল কালাম, যিনি এক দশক আগে পরিচালনায় ছিলেন। তিনি জানান, বৈশ্বিক ও দেশীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য অভিজ্ঞ ও নবীনদের সমন্বয়ে প্যানেল গঠন করা হয়েছে।

ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া খালেদ মো. ফয়সাল ইকবাল বলেন, সংগঠনের সাধারণ সদস্যদের যথাযথ সম্মান ও আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। এসব ইস্যুতে প্রতিবাদ জানিয়ে ও পরিবর্তনের প্রত্যয়ে তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।