সয়াবিন তেলের বাজারে সংকট, দামও বাড়তি

অনলাইন ডেক্স: চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাজারের অন্তত ৩০টি দোকান ঘুরেও মাত্র একটি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যায়, তাও মাত্র দুটি পাঁচ লিটারের বোতল। ঢাকার পরিস্থিতিও একইরকম—সাধারণ মুদি দোকানগুলোতে তেল পাওয়া যাচ্ছে না, বড় দোকানগুলোতে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অনেক দোকানদার তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করছেন।

ভোজ্যতেলের বাজারের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা জানান, তারা নিয়মিত সরবরাহ দিচ্ছেন, তবে বাজারে কেন সংকট তা তিনি বলতে পারেন না। মেঘনা গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার বলেন, এই সময়ে চাহিদা কমার কথা, কিন্তু সরবরাহে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে ২.৩২ লাখ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল খালাস হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৯% বেশি। জানুয়ারিতে ৩ লাখ টন সয়াবিন বীজ আমদানি হয়েছে, যা গত এক বছরে সর্বোচ্চ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্যারিফ কমিশন কোম্পানিগুলোর কাছে সরবরাহের তথ্য চেয়েছে এবং আজ রবিবার এ বিষয়ে বৈঠক হবে। তবে সংকট নতুন নয়—গত চার মাস ধরেই চলছে। সংকট কাটাতে সরকার আমদানিতে শুল্ক-কর কমালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গত ৯ ডিসেম্বর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা করা হয়।

রাজধানীর কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, হাতিরপুল এবং চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট ও খাতুনগঞ্জের বেশির ভাগ দোকানে বোতলজাত তেল নেই। যেসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে দাম বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, জানুয়ারিতে প্রতি টন সয়াবিন তেলের গড় দাম ছিল ১,০৬১ ডলার, যা নভেম্বরের তুলনায় ১০০ ডলার কম। অথচ দেশে খোলা সয়াবিনের দাম প্রতি লিটার ১৮০-১৮২ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।

মৌলভীবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আবুল হাশেম জানান, কোম্পানিগুলো এক মাসের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে রমজানের আগে সংকট কাটানো না গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।