
প্রতিবেদক: ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহৎ ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি স্যামসাং বাংলাদেশে ২২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল। তবে জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এই বিনিয়োগটি বাংলাদেশে আসেনি এবং স্যামসাং ভিয়েতনামে বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, স্যামসাং চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (কেইপিজেড) বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ছিল। তবে জমির মিউটেশন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন না হওয়ায় তারা বাংলাদেশ থেকে সরে গিয়ে ভিয়েতনামে বিনিয়োগ করে। তৎকালীন সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের অভাবে এই বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসেনি।
বর্তমান সরকার জমি সংক্রান্ত জটিলতা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ায়, বিডা ‘প্রজেক্ট অ্যাম্বাসেডর’ নামে একটি টিম গঠন করে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় করে এই সমস্যার সমাধান করেছে। ফলস্বরূপ, কোরিয়ান উদ্যোক্তা এবং ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে প্রায় ৩০ জন কোরিয়ান বিনিয়োগকারী নিয়ে এসেছেন, যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
চৌধুরী আশিক জানান, সরকার লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সমস্যা দূর করতে কাজ করছে। এছাড়া, স্টার্টআপদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তাদের সহায়তা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ডের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার খরচ তুলনামূলক কম। পানির দাম, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জমির মূল্য—সব মিলিয়ে বাংলাদেশে খরচ কম। তাছাড়া, বাংলাদেশের কর্মীরা সহজেই নতুন কিছু শিখতে পারে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয়।
বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আগামী ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে ধারাবাহিক যোগাযোগ রাখা হবে। বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত একদিনে হয় না; এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। বিডা এবং বেজা তাদের সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে কাজ করছে।