সামিট কমিউনিকেশনের শেয়ার ইস্যুতে ১০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারকে ১০ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। গত মঙ্গলবার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাছরুল্লাহ হোসাইন বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

মামলার আসামিরা হলেন সামিট কমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খান, বিটিআরসির প্যানেল আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব, সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক কমিশনার (আইন) মো. আমিনুল হক বাবু, সাবেক কমিশনার (স্পেকট্রাম) শেখ রিয়াজ আহমেদ, সাবেক কমিশনার (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী এবং সাবেক কমিশনার (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) মো. দেলোয়ার হোসাইন।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, বিটিআরসির কর্মকর্তারা ও লেক্স কাউন্সিলের প্যানেল আইনজীবীর সহযোগিতায় সামিট কমিউনিকেশনস বেআইনিভাবে ১৪ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ১৩৬টি নতুন অর্ডিনারি শেয়ার ইস্যু করে। এর মধ্যে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯১১টি শেয়ার সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক গ্লোবাল এনারিং-এ, ৪ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১১৯টি শেয়ার মরিশাসভিত্তিক সেকুওয়া ইনফ্রা টেক লিমিটেডকে এবং বাকি ৭১ লাখ ৪ হাজার ৪০৬টি শেয়ার পূর্বের শেয়ারহোল্ডার মো. আরিফ আল ইসলামের অনুকূলে যায়।

শেয়ার ইস্যুর ফলে কোম্পানির মূলধন প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে মোট শেয়ার সংখ্যা ৫ দশমিক ০৭ কোটি থেকে ১৯ দশমিক ২৮ কোটিতে পৌঁছে। এর ফলে মোহাম্মদ ফরিদ খানের মালিকানা ৯৫ শতাংশ থেকে কমে ২৫ শতাংশে নেমে আসে এবং দুই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের যৌথ মালিকানা ৭০ শতাংশে দাঁড়ায়।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১-এর ধারা ২৪ অনুযায়ী, শেয়ার হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিক্রীত শেয়ারের মূল্যের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়। ২০২২ সালের শেয়ার হস্তান্তরে সরকারি রাজস্ব আদায়ে আইনের প্রয়োগ থাকলেও, এ ক্ষেত্রে বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব অবৈধভাবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্য পরিশোধ সামিট কমিউনিকেশনের জন্য প্রযোজ্য নয় বলে মতামত দেন। এই মতামতের ভিত্তিতে বিটিআরসির তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কমিশনাররা শেয়ারের অনুমোদন দিয়ে সরকারকে প্রায় ১০ কোটি ২৪ লাখ টাকার ক্ষতি করেন।

দুদক উপপরিচালক মো. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম সামিট গ্রুপের দুর্নীতি ও অনিয়ম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছে।