
নিজস্ব প্রতিবেদক: একজন আলোকিত মানুষ, যিনি সারাজীবন মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, তিনি আজ বিনা দোষে বিচারের কাঠগড়ায়। তিনি দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান, একুশে পদকপ্রাপ্ত সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এই প্রখ্যাত শিল্পপতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি দায়ের হওয়া হত্যাচেষ্টার অভিযোগ শুধু আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাই নয়, দেশের রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক অঙ্গনেও তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
যিনি নিজ হাতে একটি শিল্প সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো মানুষের,যিনি সমাজসেবার মাধ্যমে লাখো মানুষের জীবনে এনেছেন ইতিবাচক পরিবর্তন—কেন আজ তাঁকে এমন এক গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলে। এই মামলা কি ন্যায়বিচারের পথে চালিত হচ্ছে, নাকি এটি একটি সুপরিকল্পিত অপতৎপরতা?
১৯৪৩ সালের ১২ মার্চ নারায়ণগঞ্জে জন্ম নেওয়া সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের কর্মজীবনের শুরু ১৯৬৭ সালে, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে। তাঁর স্বপ্ন ও পরিশ্রমের ফসল হিসেবে ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে পিএইচপি গ্রুপ, যা আজ ইস্পাত, গ্লাস, অটোমোবাইল, কৃষি, টেক্সটাইল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বিস্তৃত এক বিশাল শিল্পগোষ্ঠী। ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি সমাজকল্যাণে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে তাঁর ভূমিকা বাংলাদেশে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই ব্যতিক্রমী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘একুশে পদক’ এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড–ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস পুরস্কারসহ অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
এমন একজন স্বনামধন্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের হওয়ায় স্তম্ভিত হয়েছে দেশ। মামলার ভেতরের তথ্য এখনও তদন্তাধীন, তবে যেভাবে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই অনেকের কাছে ‘অবিশ্বাস্য’ ঠেকছে। যে মানুষটির জীবন জনহিতকর কর্মে পরিপূর্ণ, যাঁর অতীত জীবনে কোনো প্রকার অপরাধের চিহ্ন নেই, তাঁর বিরুদ্ধে হঠাৎ এমন গুরুতর অভিযোগ—এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, এর নেপথ্যে কারা কলকাঠি নাড়ছে?
সুত্র বলছে, সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে ঘিরে দায়ের হওয়া মামলার পেছনে একাধিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ইন্ধন রয়েছে। গ্লাস ও স্টিল সেক্টরে পিএইচপি গ্রুপের আধিপত্য অনেক প্রতিযোগীর জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় চলমান প্রকল্প ও জমিজমা ঘিরেও কিছু গোষ্ঠীর অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। তাদের লক্ষ্য সুফি মিজানের সুনাম ক্ষুণ্ন করে পিএইচপির অগ্রযাত্রা থামানো। এ প্রক্রিয়ায় কিছু সাংবাদিক বা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানও ইন্ধনদাতাদের পক্ষে কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মামলার মূল উদ্দেশ্য সম্ভবত কেবল আইনি বিচারিক প্রক্রিয়া নয়, বরং সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের দীর্ঘদিনের অর্জিত সম্মান ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে ধূলিসাৎ করা। একটি সুপরিচিত কৌশল হলো—প্রথমে সমাজে একজন ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করা, তারপর তাকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলা এবং শেষ পর্যন্ত তার সকল অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। রাজনীতিতে এমন কৌশল বহুবার দেখা গেলেও, এবার তা শিল্প ও সমাজজগতের এক বর্ষীয়ান নেতার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা, সেই প্রশ্ন এখন সর্বত্র।
সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে ঘিরে মামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।তাদের মতে, সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শুধু একজন মানবিক নেতা নন, তিনি দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক নেতাও। এমন একজন সমাজগঠনে নিবেদিত মানুষকে এভাবে হেয় করা নৈতিকতা ও ন্যায়বিচারের ওপর সরাসরি আঘাত।অনেকেই এটিকে এক ধরনের সুবিধালোভী গোষ্ঠীর কুৎসিত ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।