সোনার বার আনার সুযোগ বছরে একবার, শুল্ক বাড়ল ভরিপ্রতি

প্রতিবেদক: নতুন বাজেট ঘোষণার পরপরই পরিবর্তন আনা হয়েছে পর্যটক ব্যাগেজ বিধিমালায়। এতে করে বিদেশ থেকে সোনা, গয়না ও মোবাইল ফোন আনার ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে। আগে একজন যাত্রী প্রতি সফরে একটি করে সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম ওজনের সোনার বার শুল্ক দিয়ে আনতে পারতেন। কিন্তু নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনো যাত্রী বছরে মাত্র একবারই শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে একটি সোনার বার আনতে পারবেন। এই নিয়ম কার্যকর হওয়ায় একাধিকবার সোনা আনার সুযোগ আর থাকছে না।

সোনার বারে শুল্কহারও বাড়ানো হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.664 গ্রাম) সোনার জন্য ৫ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে। অর্থাৎ একটি ১১৭ গ্রাম ওজনের সোনার বারের জন্য ৫০ হাজার টাকা শুল্ক গুনতে হবে। পূর্বে ভরিপ্রতি শুল্ক ছিল ৪ হাজার টাকা।

সোনার গয়না আনার ক্ষেত্রেও এসেছে কড়াকড়ি। আগে কোনো যাত্রী যতবার খুশি ততবার ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনতে পারতেন। এখন থেকে বছরে একবারই ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার গয়না শুল্কমুক্তভাবে আনার অনুমতি থাকবে।

মুঠোফোন আনার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। এখন একজন বিদেশফেরত যাত্রী দুইটি ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং প্রতিবছর মাত্র একবার একটি নতুন মোবাইল ফোন শুল্ক ছাড়াই আনতে পারবেন। আগে ব্যবহৃত ফোন ছাড়াও প্রতিবার শুল্ক দিয়ে নতুন ফোন আনার সুযোগ ছিল।

বিগত পাঁচ বছরে যাত্রী ব্যাগেজ সুবিধা ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ সোনা দেশে আনা হয়েছে। শুধুমাত্র ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ১৪২ টনের বেশি সোনা যাত্রীরা এনেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ধারণা করা হয়, এর একটি বড় অংশ সোনার বার হিসেবে ভারতে পাচার হয়ে গেছে। সীমান্তে এসব সোনা আটকের ঘটনাও ঘটেছে। তাই এবারের ব্যাগেজ বিধিমালায় কড়াকড়ির মাধ্যমে এই প্রবণতা রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তবে কিছু ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য শিথিলতাও রাখা হয়েছে। যেমন, আগে ভুলবশত ব্যাগেজ ঘোষণা না করলে ৭ দিনের মধ্যে সংশোধনের সুযোগ ছিল। নতুন বিধিমালায় সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ দিন করা হয়েছে। অর্থাৎ, যাত্রী এখন ভুল করে ঘোষণা না করলেও ৩০ দিনের মধ্যে সঠিকভাবে ঘোষণা দিয়ে নিয়ম মেনে শুল্ক-কর পরিশোধ করে পণ্য খালাস নিতে পারবেন।

ব্যাগেজে নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি পণ্য আনলে শুল্ক-কর, জরিমানা এমনকি আমদানি নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্র লাগতে পারে। তবে নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত পণ্যের ক্ষেত্রে এসব সুবিধা প্রযোজ্য নয়।

সোনার বার ও মোবাইল আনার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে সরকার পাচার ঠেকাতে ও ব্যাগেজ সুবিধার অপব্যবহার বন্ধে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।