স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাব সংখ্যা ২.৮১ কোটি, তিন মাসে ২ লাখ অ্যাকাউন্ট বেড়েছে

প্রতিবেদক: বাংলাদেশে স্বল্প আয়ের জনগণের ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করার লক্ষ্যে সরকার ২০১০ সালে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ তৈরি করেছিল। এসব হিসাবকে বলা হয় নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্ট (এনএফএ), যেখানে কোনো ন্যূনতম ব্যালান্স বা সার্ভিস চার্জ নেই। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমানত দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২২০ কোটি টাকা বা ৪.৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে আমানত ছিল চার হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। তবে স্কুল ব্যাংকিং ও কর্মজীবী শিশুদের অ্যাকাউন্ট এই হিসাবের বাইরে।

এনএফএ অ্যাকাউন্টের আওতায় থাকা এই হিসাবগুলো সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ, যেমন কৃষক, পোশাক শ্রমিক, অতিদরিদ্র মানুষ, এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা ব্যবহার করেন। বিশেষত, কৃষকরা এ ধরনের অ্যাকাউন্টে সবচেয়ে বেশি আমানত রাখছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এসব হিসাবের মাধ্যমে আমানতের পরিমাণ ছিল চার হাজার ২৮২ কোটি টাকা। তিন মাসের মধ্যে, ডিসেম্বর শেষে এই আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, যা ৪০৩ কোটি টাকা বা ৮.৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮১ লাখ ২৩ হাজার ৩৯০টি, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ২ লাখ ৫১ হাজার ৫১২টি বেড়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে গত কয়েক মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল, যা ব্যাংকিং খাতে কিছুটা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছিল। এই সময় অনেকেই ব্যাংক থেকে তাদের আমানত তুলে নিয়েছিল। তবে, নতুন সরকারের নেতৃত্বে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার ফলে মানুষ আবার তাদের টাকা ব্যাংকে রাখতে শুরু করেছে।

এ ছাড়া, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে এসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আসা প্রবাস আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৬.১৬ শতাংশ বেশি।

এই ধরণের উদ্যোগ এবং পরিস্থিতির পরিবর্তন ব্যাংকিং খাতে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করেছে, যার ফলে স্বল্প আয়ের মানুষও তাদের অর্থ নিরাপদ রাখতে শুরু করেছে।