
প্রতিবেদক: মৌসুমের শুরুতে লাভের আশায় হিমাগারে আলু মজুত করেছিলেন নওগাঁর কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখন বিক্রির সময় এসে তারা পড়ে গেছেন বড় ধরনের লোকসানে। হিমাগারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৪–১৫ টাকায়, যেখানে উৎপাদন থেকে সংরক্ষণ পর্যন্ত খরচ পড়েছে ২৫–২৬ টাকা। ফলে প্রতি কেজিতে প্রায় ১০ টাকা করে ক্ষতি গুনতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, নওগাঁর আটটি হিমাগারে এ বছর ২ লাখ ৪০ হাজার বস্তা (প্রতি বস্তা ৬০ কেজি) আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে, মোট প্রায় ১৪ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। এতে শুধু এই জেলাতেই সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর বাইরে অনেকেই বগুড়া, জয়পুরহাট ও রাজশাহীর হিমাগারেও আলু রেখেছেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর জেলায় ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে ৫ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি।
বদলগাছীর কৃষক রাসেল রানা ২০০ বস্তা আলু হিমাগারে রেখেছিলেন। তাঁর হিসাবে, একেক বস্তায় খরচ হয়েছে প্রায় ১,৫০০ টাকা, আর এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮০০–৮৫০ টাকায়। বস্তাপ্রতি ৬০০–৬৫০ টাকা লোকসান।
সদর উপজেলার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ১,৭০০ বস্তা আলু মজুত করেছিলেন। তিনি জানালেন, এখন তুললে প্রায় ১০ লাখ টাকা লোকসান হবে। তিলকপুরের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ১,২০০ বস্তা আলু রেখেছেন, কিন্তু ভাড়ার ভয়ে হিমাগারের ফোন ধরছেন না। তাঁর ধারণা, বস্তাপ্রতি কমপক্ষে ৫০০ টাকা ক্ষতি হবে।
কাঁঠালতলীর মাহমুদ হোসেন কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থাপক জানান, তাঁদের ৩২ হাজার বস্তা ধারণক্ষমতার হিমাগারে এখনো ৮৫ শতাংশ আলু রয়ে গেছে। তাঁর ভাষায়, “ভাড়া দেওয়ার ভয়ে কৃষক-ব্যবসায়ীদের অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।”