১৬৮ কোটি টাকা খেলাপি: সিএসএস করপোরেশনের বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তুলছে অগ্রণী ব্যাংক

প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের ইস্পাত খাতের ব্যবসায়ী আবু বকর চৌধুরীর মালিকানাধীন সিএসএস করপোরেশন (বিডি) লিমিটেড এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অগ্রণী ব্যাংকের ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এই খেলাপি ঋণ আদায়ে হাটহাজারী থানাভুক্ত ২ হাজার ১৮০ শতক জমি ও স্থাপনা নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৮ মে এসব বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তোলা হবে। আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো অংশগ্রহণ করে সম্পত্তিগুলো কিনতে পারবেন।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বারবার তাগাদা দিলেও সিএসএস করপোরেশন ঋণ পরিশোধ করেনি। এমনকি চেক প্রত্যাখ্যানের একাধিক মামলাও আদালতে চলমান রয়েছে। অগ্রণী ব্যাংক সূত্র জানায়, এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করা হবে।

এদিকে বায়েজিদ গ্রুপের আরও একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান—বায়েজিদ স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ—প্রায় ৭৩ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফিনিক্স ফাইন্যান্সের মামলায় পড়েছে। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ফিনিক্স চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে। আরও কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও গ্রুপটির খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

উল্লেখ্য, নব্বই দশকে আবু বকর চৌধুরীর হাত ধরে যাত্রা শুরু করে বায়েজিদ গ্রুপ। তাদের কারখানা ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে গড়ে ওঠে এবং ২০০১ সালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রড উৎপাদন শুরু করে। সিএসএস করপোরেশন ছাড়াও গ্রুপের আওতায় রয়েছে সিএসএস পাওয়ার লিমিটেড, এবিসি অ্যাসোসিয়েশন, এবিবি মার্ক হোল্ডিং এবং এইচইএল ফার্মস লিমিটেড।

বায়েজিদ গ্রুপের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ডলার রেট বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নিজেদের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে ব্যয়বহুল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করায় আর্থিক চাপ বেড়েছে এবং বিক্রি হ্রাস পেয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর ঋণ পরিশোধে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।

আবু বকর চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলে তিনি জানান, বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন, তবে খেলাপি ঋণ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।