
অনলাইন ডেক্স: অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আকার কমানো হয়েছে। ৪৯ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে সংশোধিত এডিপির চূড়ান্ত আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। এর আগে কখনো এডিপিতে এত বড় পরিমাণ কাটছাঁট করা হয়নি।
গতকাল (সোমবার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি অনুমোদন করা হয়। ঢাকার শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত এডিপিতে মোট প্রকল্পের সংখ্যা ১,৪৩৭। পাশাপাশি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন খরচ বাবদ অতিরিক্ত ১০,১২৬ কোটি টাকা পাস করা হয়েছে। ফলে মোট উন্নয়ন ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ১২৬ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে বাস্তবায়ন হার কম থাকায় এর পরিমাণ হ্রাস করা হয়েছে।
সংশোধিত এডিপি প্রণয়নের সময় দেশীয় উৎসের অর্থ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি সহায়তা ১৯ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে। এখন দেশীয় উৎস থেকে বরাদ্দ ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি সহায়তা ৮১ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যবারের মতো এবারও স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন,শিক্ষার অনেক প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে, তাই বন্ধ করে দিয়েছি। স্বাস্থ্যসেবায়ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় বরাদ্দ কমানো হয়েছে। ফলে অনেক প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে।
সংশোধিত এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ মাত্র ৫,৬৬৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা, যেখানে মূল এডিপিতে এই বরাদ্দ ছিল ১১,১৫৩ কোটি টাকা।
সংশোধিত এডিপির ৬৩% বরাদ্দ প্রধান পাঁচটি খাতে বণ্টন করা হয়েছে।
খাত | বরাদ্দ (কোটি টাকা) | সংশোধিত এডিপির শতকরা হার |
পরিবহন ও যোগাযোগ | ৪৮,২৫৩ | ২২% |
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি | ৩১,৮৯৭ | ১৫% |
শিক্ষা | ২০,৩৫০ | ৯.৫% |
গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধা | ১৯,৬৫৩ | — |
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন | ১৬,৯০৯ | — |
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮৯টি প্রকল্পের এক টাকাও খরচ হয়নি এবং ১২১টি প্রকল্পে ১ শতাংশ কাজও হয়নি। এডিপি বাস্তবায়নে এই ধীরগতি সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।