
প্রতিবেদক: বিদেশ থেকে ৭২১ কোটি টাকা এনে সেটিকে রেমিট্যান্স হিসেবে দাবি করে কর ছাড় চেয়েছেন ব্যবসায়ী এসএম ফারুকী হাসান। তিনি ক্ষমতাচ্যুত শাসক দল আওয়ামী লীগের নেতা এবং কানাডার অন্টারিও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
ফারুকী হাসান জানিয়েছেন, তিনি এই টাকা চীনা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পেয়েছেন। ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে কয়েক ধাপে নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন ও চায়না শিপবিল্ডিং অ্যান্ড অফশোর ইন্টারন্যাশনালসহ কয়েকটি কোম্পানি থেকে তিনি এই অর্থ পাঠিয়েছেন।
তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে তিনি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিদেশ থেকে এনেছেন।
কর কর্মকর্তারা জানান, ফারুকী হাসান কর ছাড়ের আবেদন করলেও এই আয়ের সাপক্ষে যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।
২০২১ সালে কর জোন-৫ মামলাটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ, তদন্তে উঠে আসে, যখন তিনি এই অর্থ গ্রহণ করেন, তখন তিনি বাংলাদেশেই অবস্থান করছিলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের তদন্তে উঠে এসেছে, মাত্র ১৫,৫৪৩ টাকা কর দিয়ে ৭২১ কোটি টাকার রেমিট্যান্স মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছিল।
একজন কর কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।
গত সোমবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এক অনুষ্ঠানে বলেন, একজন ৭৩০ কোটি টাকা রেমিট্যান্স হিসেবে এনেছেন, যা বর্তমানে তদন্তাধীন।”
কর কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই টাকা বিদেশে পাচার করে পুনরায় দেশে আনা হয়েছে এবং কর সুবিধা নেওয়ার জন্য এটিকে রেমিট্যান্স হিসেবে দেখানো হয়েছে।
সরকার রেমিট্যান্সের ওপর ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়। কর্মকর্তাদের সন্দেহ, এই সুবিধা নেওয়ার জন্যই লেনদেনটি করা হয়েছে।
ফারুকী হাসান হোটেল লেক ক্যাসল, প্রতীক ডেভেলপারস, প্রতীক সিরামিকস লিমিটেড ও প্রতীক ফুড অ্যান্ড অ্যালাইড লিমিটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
কর কর্মকর্তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তিনি অবৈধভাবে কর সুবিধা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ফারুকী হাসানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।