নারায়ণগঞ্জের জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের গতি বাড়ছে

অনলাইন ডেক্স: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন— যা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল নামেও পরিচিত, এখন রপ্তানিমুখী বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকৃষ্ট করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।

এ অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাওয়াচি বলেন, “আমরা এখন রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এফডিআই পাওয়ার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি, কারণ এটি বাংলাদেশকে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করবে।”

জাপানি প্রতিষ্ঠান লায়ন-কল্লোল লিমিটেড আগামী মার্চ বা এপ্রিলে উৎপাদনে যাচ্ছে। পাশাপাশি আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কারখানা নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইতোমধ্যে, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড সেখানে উৎপাদন শুরু করেছে এবং প্রতিদিন ১,০০০ ইউনিট রেফ্রিজারেটর ও টেলিভিশন তৈরি করছে। প্রতিষ্ঠানটি ৩৩.৪ একর জমিতে ৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

এছাড়া, রাসায়নিক, খাদ্য ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স সামগ্রী উৎপাদনে বেশ কয়েকটি রপ্তানিমুখী বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

কাওয়াচি জানান, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে গ্রাহক পরিদর্শন কমে গেলেও বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। বর্তমানে বিনিয়োগ ও জমি কেনার বিষয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

এ অঞ্চলে জমি নিয়েছে— সিঙ্গার বাংলাদেশ,জার্মানির রুডলফ জিএমবিএইচ
জাপানের লায়ন কর্পোরেশন, ওনোডা ও নিক্কা কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড

গত বছর বেঙ্গল আইআরআইএস টাকুমি লিমিটেড একটি সাব-লিজ চুক্তি সই করে, যারা গার্মেন্টস শিল্পের জন্য বোতাম উৎপাদনের অত্যাধুনিক কারখানা স্থাপন করবে।

এছাড়া, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে উচ্চ মানের হেয়ার প্রোডাক্ট উৎপাদন ও জাপানে রপ্তানির জন্য আর্টনেচার বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে জমি বিক্রির চুক্তি সই করা হয়।

বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের যৌথ উদ্যোগে ১,০০০ একর জমিতে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৯০ একর জমি হস্তান্তর করা হয়েছে।৫০০ একর জমির প্রথম ধাপের উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে, যা শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৫০০ একর জমি উন্নয়নের নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) বর্তমানে অগ্রাধিকারমূলক অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর উন্নয়নে কাজ করছে।

জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল,শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল।জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল,মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল ও জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল।

বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “আগামী দুই বছরের মধ্যে আমরা এই অঞ্চলগুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও ইউটিলিটি পরিষেবা— যেমন পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করবো।”

এর মাধ্যমে— ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।২,৩৮,০০০ এরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল বিদেশি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বৃদ্ধির একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হয়ে উঠছে। সিঙ্গারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে, আর লায়ন-কল্লোলসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করবে। সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চল বাংলাদেশে শিল্পায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।