
অনলাইন ডেক্স: বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী, নারী শ্রমিকদের জন্য প্রসূতিকালীন ছুটি ১৬ সপ্তাহ। তবে শ্রমিকপক্ষের দাবি, অন্যান্য খাতের মতো এ ছুটির মেয়াদ ৬ মাস বা ১৮০ দিন করা হোক। মালিকপক্ষ এ দাবিতে রাজি না হওয়ায়, সরকার মাঝামাঝি সমাধান হিসেবে ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন করার প্রস্তাব দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর বৈঠকে নারী শ্রমিকদের প্রসূতিকালীন ছুটি ১২০ দিন করার বিষয়ে শ্রমিক, মালিক ও সরকারপক্ষ একমত হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন-এর সভাপতিত্বে ঢাকার বিজয়নগরে শ্রম ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানসহ টিসিসির ৬০ জনের বেশি সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
টিসিসি বর্তমানে ১০১টি ধারা সংশোধন ও সংযোজনের কাজ করছে, যার মধ্যে কিছু ধারা বিলুপ্ত করারও প্রস্তাব রয়েছে। আগামী মার্চের মধ্যে সংশোধিত আইন অধ্যাদেশ আকারে জারির পরিকল্পনা রয়েছে।
এর আগে শ্রমসচিবের সভাপতিত্বে একাধিক বৈঠকে ৭৯টি বিষয়ে একমত হয়েছে তিন পক্ষ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তগুলো হলো—ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে প্রয়োজনীয় সমর্থন কমিয়ে ২০% থেকে ১৫% করা।অংশগ্রহণ তহবিলের অর্থ সমানভাবে বণ্টন।শ্রমিকদের জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানোর বাধ্যবাধকতা বাতিল।নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিধান সংযোজন
সন্তান প্রসবের পর কাজে ফেরার সময়সীমা আগে ৮ সপ্তাহের মধ্যে কোনো নারী শ্রমিককে কাজে বাধ্য করা যেত না, এখন তা ৬০ দিন করা হয়েছে।
মজুরি পরিশোধ ব্যবস্থা আগে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার মজুরি নগদে পরিশোধের বিধান ছিল, এখন ব্যাংক বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতেও পরিশোধের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে বা কর্মস্থলে যাতায়াতকালে দুর্ঘটনার শিকার হলে, সেটি কর্মক্ষেত্রের দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করার প্রস্তাব মালিকপক্ষ মেনে নেয়নি।
বৈঠকে শ্রমিক নেতা তাসলিমা আক্তার অভিযোগ করেন, খসড়ার বিভিন্ন জায়গায় “নারী” শব্দের পরিবর্তে “মহিলা” ব্যবহার করা হয়েছে, যা সংশোধনের দাবি তোলেন তিনি। শ্রম উপদেষ্টা বিষয়টি আমলে নেন। তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা মারাত্মক অপরাধ, যা আইন সংশোধনের মাধ্যমে আরও স্পষ্ট করা হবে।
বৈঠক শেষে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, “সব পক্ষ থেকে পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। টিসিসির কাজ হলো এগুলো সংকলন করা এবং উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের জন্য পাঠানো।”