
অনলাইন ডেক্স: পবিত্র রমজান শুরুর আগেই বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তবে এ অর্থের উৎস কীভাবে নিশ্চিত করা হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বুধবার সচিবালয়ে ‘বেক্সিমকো শিল্পপার্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র সপ্তম বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানসহ বিভিন্ন সরকারি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সাখাওয়াত হোসেন জানান, গত ২৮ জানুয়ারির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। এ বিষয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য আজকের বৈঠক ডাকা হয়। তিনি বলেন, “ভালো অগ্রগতি হয়েছে, চলতি মাসের মধ্যেই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। ১৮ ফেব্রুয়ারির বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে এবং রমজানের আগেই টাকা শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাবে পৌঁছাবে।”
তবে কত টাকা প্রয়োজন এবং কতজন শ্রমিক পাওনা পাবেন—এই প্রশ্নের নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে জানা গেছে, পাওনাদার শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা ২৭ হাজারের বেশি।
বেক্সিমকোর চালু থাকা দুটি প্রতিষ্ঠান—বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকস-এর উদ্যোক্তাদের শেয়ার বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করা হবে, নাকি অর্থ বিভাগ থেকে সরকারি তহবিল দেওয়া হবে—এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “এ বিষয়ে ১৮ তারিখের বৈঠকের পর জানা যাবে। শেয়ার বিক্রি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা আছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
শ্রমিকদের পুনর্বাসন বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তাঁরা এখনো বেক্সিমকোর শ্রমিক। তবে সবাই দক্ষ, তাই বেকার থাকার আশঙ্কা নেই। সরকার তাদের কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছে।” পোশাক খাতে ৫-৭% জনবল ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইপিজেড ও বিডার মাধ্যমে শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বেক্সিমকো শিল্পপার্কের আওতাধীন ৩১টি প্রতিষ্ঠানের মোট ব্যাংকঋণ ২৮,৬০৭ কোটি টাকা। এর বিপরীতে বন্ধক রাখা সম্পদের মূল্য ৪,৯৩২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৭.২৪%। এর মধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান অস্তিত্বহীন বলে চিহ্নিত হয়েছে, যাদের ঋণের পরিমাণ ১২,০০০ কোটি টাকা, যার বেশিরভাগই জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া।
১৮ ফেব্রুয়ারির বৈঠকের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।