আইএমএফের চতুর্থ কিস্তি ছাড় আরও পিছিয়েছে

অনলাইন ডেক্স: চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আরও পিছিয়ে দিয়েছে। আগামী জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব একসঙ্গে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে, জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার, রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে তিনি এ তথ্য দেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বলেছি যে, আমাদের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। আমরা অত তাড়া করছি না। আইএমএফ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি ভিক্ষা নেওয়ার মতো নয়, বরং আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে এবং শর্ত পূরণের ভিত্তিতে এ ঋণ গ্রহণ করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “এখন আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি ভালো, চলতি হিসাব, আর্থিক হিসাব এবং প্রবাসী আয়ও ভালো। আমরা মরিয়া হয়ে উঠছি না।”

আগামী মার্চে কি আইএমএফ পর্ষদে প্রস্তাব উঠবে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, “মার্চে নয়, জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির প্রস্তাব একসঙ্গে উঠবে।”

চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব প্রথমে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের সভায় উপস্থাপনের কথা ছিল, তবে তা পিছিয়ে ১২ মার্চ করা হয়। এরপর তা আবারও জুনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বোর্ড অনুমোদন দিলে, কয়েকদিন পর দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হতে পারে।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে প্রতিটি কিস্তি পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে। চতুর্থ কিস্তির জন্য গত জুনভিত্তিক শর্তগুলির মধ্যে কর সংগ্রহ ছাড়া সব শর্ত পূরণ হয়েছে। আইএমএফের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল ৩ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করে এবং শর্তগুলির বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় কর আহরণ বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, শুধুমাত্র চতুর্থ কিস্তির জন্য নয়, আগের কিস্তিগুলোর জন্যও কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আইএমএফ প্রতিনিধি দল কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চাপ দেয় এবং কর-জিডিপি অনুপাত বছরে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার শর্ত দেয়। সরকার এ শর্ত নিয়ে দরকষাকষি করেছে। বাড়তি রাজস্ব আহরণের কৌশল হিসেবে সরকার উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেও অর্থবছরের মাঝপথে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায়। তবে এ সিদ্ধান্তে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং নানা মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়, যার ফলে কিছু পণ্য ও সেবায় শুল্ক কমানো হয়।