রমজানের আগে কমেছে খেজুরের দাম, বেড়েছে আমদানি

অনলাইন ডেক্স: রমজানের আগেই ইফতারের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কমতে শুরু করেছে। গত এক মাসে পাইকারি বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি খেজুরের দাম ৩৫ থেকে ৪৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের মতে, অগ্রিম কর অব্যাহতি, কাস্টমস ডিউটি কমানো এবং অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু হ্রাস করার ফলে এই মূল্যহ্রাস সম্ভব হয়েছে।

চট্টগ্রামের পাইকারি ফল বাজার ‘ফলমন্ডি-র ব্যবসায়ীরা জানান, বিভিন্ন ধরনের খেজুরের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে।

  • মাবরুম (সৌদি আরব): প্রতি কেজি ১,৬০০ টাকা থেকে কমে ১,২০০ টাকা (৪০০ টাকা কম)
  • আজওয়া (সৌদি আরব): প্রতি কেজি ৮০০-১,০০০ টাকা থেকে কমে ৬৪০-৮০০ টাকা (১০০-২০০ টাকা কম)
  • মেডজুল (মিশর): প্রতি কেজি ১,২০০-১,৪০০ টাকা থেকে কমে ৯২০-৯৬০ টাকা (৪৪০ টাকা কম)
  • জায়েদি (ইরাক): প্রতি কেজি ৫২০-৫৪০ টাকা থেকে কমে ৩৫০-৩৭০ টাকা (১৭০ টাকা কম)
  • নাগাল (ইরাক): প্রতি কেজি ৭২০-৭৩০ টাকা থেকে কমে ৫৬০-৫৭০ টাকা (১৬০ টাকা কম)
  • দাব্বাস (ইরাক): প্রতি কেজি ৮৬০ টাকা থেকে কমে ৭০০ টাকা (১৬০ টাকা কম)
  • ছররা (তিউনিসিয়া): প্রতি কেজি ৫৪০-৫৯০ টাকা থেকে কমে ৪০০-৪৫০ টাকা (১৪০ টাকা কম)
  • বস্তার নরম খেজুর: প্রতি কেজি ১৫৫-১৬০ টাকা থেকে কমে ১২৫-১৩০ টাকা (৩৫ টাকা কম)

খেজুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মায়েদা ডেটস-এর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ জাহেদ জানান, করোনার সময় দেশে খেজুরের চাহিদা বাড়তে থাকলেও, ২০২৩ সালে সরকার শুল্ক ও অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বৃদ্ধি করায় আমদানি ও চাহিদা কমে যায়। তবে বর্তমান সরকার শুল্ক ও অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু কমিয়ে দেওয়ায় আমদানি আবার বেড়েছে এবং দামও কমেছে।

সরকার নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়ায় খেজুরের দাম কমেছে

  • ৫% অগ্রিম কর অব্যাহতি
  • কাস্টমস ডিউটি ২৫% থেকে কমিয়ে ১০% করা
  • অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু হ্রাস

এর ফলে খেজুরের আমদানি মূল্য কমে গেছে, যা সরাসরি খুচরা বাজারেও প্রভাব ফেলেছে।

শুল্ক ছাড়ের কারণে দেশে খেজুরের আমদানি দ্বিগুণ হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-১৫ ফেব্রুয়ারি) সাড়ে সাত মাসে ৪৪,২৫৩ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ছিল মাত্র ২০,২৬৩ টন।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফআইএ) তথ্য অনুসারে, দেশে বার্ষিক খেজুরের চাহিদা ৬০-৯০ হাজার টন, এর মধ্যে শুধু রমজান মাসেই প্রয়োজন হয় ৪০ হাজার টন।

২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত খেজুর আমদানিতে মোট ৬৩.৬% শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হতো, যা পূর্বে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৫৯% এবং ২০২২ সালের আগে সর্বোচ্চ ১৫.৬%। বর্তমান শুল্কহার কমিয়ে আনার ফলে আমদানি বেড়েছে এবং বাজারে দাম কমেছে।

এনবিআর খেজুরের অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু হ্রাস করেছে ভালো মানের খেজুর (আজওয়া, মরিয়ম, মেডজুল, মাবরুম, আম্বর) ৪ ডলার থেকে কমিয়ে ৩.৭৫ ডলার