১০ মাস পর খাদ্যের মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কে নামল

অনলাইন ডেক্স: দীর্ঘ ১০ মাস পর দেশের খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। এর আগে, ২০২৩ সালের মার্চ মাসের পর থেকে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে ছিল না, যা সীমিত আয়ের মানুষের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভোগান্তির কারণ হয়েছিল। গত বছরের মার্চ মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, চার মাস ধরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে এটি ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ।

বিবিএসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শীতকালীন শাকসবজির দাম কম থাকায় এবং চালের বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন না হওয়ায় খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের ওপর করের মতো প্রভাব ফেলে। যখন আয় স্থির থাকে কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তখন মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পায়। আয় অনুযায়ী ব্যয় সামলাতে না পারলে অনেককে ঋণ নিতে হয় বা খরচ কমাতে বাধ্য হতে হয়। অর্থাৎ, মূল্যস্ফীতির তুলনায় আয় বৃদ্ধি কম হলে প্রকৃত আয় কমে যায় এবং সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ হওয়া মানে হলো, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে যেসব পণ্য ও সেবা ১০০ টাকায় কেনা যেত, তা কিনতে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১০৯ টাকা ৩২ পয়সা খরচ হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ টাকায় ব্যয় বেড়েছে ৯ টাকা ৩২ পয়সা।

বিবিএসের তথ্য অনুসারে, ফেব্রুয়ারি মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে, যা জানুয়ারি মাসে ছিল ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। তবে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে—জানুয়ারিতে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ থাকলেও ফেব্রুয়ারিতে এটি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তেল, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্ক ও কর হ্রাস করেছে। বাজারে নিত্যপণ্যের আমদানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্যও সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় এখনো বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবে সরকার নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিগুলো কার্যকর রাখতে পারলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হতে পারে।