চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট কমলেও ঈদে ফের বাড়ার শঙ্কা

In বন্দর
March 13, 2025

অনলাইন ডেক্স: চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কমলাপুর আইসিডিগামী কনটেইনারের জট কিছুটা কমেছে। পণ্যবাহী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর ফলে এই স্বস্তি ফিরে এসেছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য আশার খবর। তবে এখনো বন্দরের ধারণক্ষমতার তুলনায় প্রায় আড়াই শতাধিক বেশি কনটেইনার জমা রয়েছে।

পবিত্র রমজানের মাঝামাঝি কনটেইনার পরিবহনে কিছুটা স্বস্তি এলেও ঈদের আগে-পরে পরিস্থিতি আবার জটিল হতে পারে। কারণ, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে, যার ফলে বাড়তি ইঞ্জিনের প্রয়োজন হবে। এ কারণে কনটেইনারবাহী ট্রেনের সংখ্যা কমানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

বন্দর সূত্র জানায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বন্দরের ইয়ার্ডে কমলাপুর আইসিডিগামী ১,৮১১টি কনটেইনার ছিল, যেখানে বন্দরের ধারণক্ষমতা ৮৭৬টি। সে সময় দৈনিক গড়ে দুটি ট্রেনও পাওয়া যেত না। জানুয়ারিতে যেখানে ৬৮টি ট্রেন চলেছে, সেখানে ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৫ দিনে মাত্র ২৮টি ট্রেন পাওয়া যায়। ফলে কনটেইনার পরিবহনে গড় বিলম্ব ছিল ১৫ দিন। তবে ১১ মার্চ এই সংখ্যা কমে ১,১০৫টিতে দাঁড়িয়েছে এবং ১১১টি কনটেইনার ট্রেনে করে কমলাপুর আইসিডিতে পাঠানো হয়েছে, যার ফলে অপেক্ষার সময়ও কিছুটা কমেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, কমলাপুরগামী কনটেইনারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পণ্যবাহী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে পানগাঁও নৌপথে কনটেইনার খালাসের ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে, যা জট কমাতে সহায়তা করছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, কনটেইনারবাহী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে আগের তুলনায় বেশি পণ্য পরিবহন সম্ভব হচ্ছে। তবে ঈদের সময় এই ধারা বজায় থাকবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।

বন্দর সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি বন্দরে ধারণক্ষমতার প্রায় আড়াই গুণ কনটেইনার জমে গিয়েছিল। রেলওয়ের ইঞ্জিনসংকটের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। বন্দরের চাপ সামলাতে রেলওয়েকে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয় এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দুই সংস্থা জরুরি বৈঠকে বসে। এর পর থেকে প্রতিদিন তিন জোড়া ট্রেন চালানো হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, পূর্বাঞ্চলে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর জন্য ১১৬টি ইঞ্জিন প্রয়োজন হলেও নিয়মিত মাত্র ৮০-৮৫টি ইঞ্জিন পাওয়া যায়। এর মধ্যে চারটি ইঞ্জিন অকেজো। ফলে ট্রেন চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।

বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৩টি ইঞ্জিন প্রয়োজন, যা পাওয়া যাচ্ছে মাত্র পাঁচ-ছয়টি। এ ইঞ্জিন দিয়ে কনটেইনার ও তেলবাহী ট্রেন চালানো হয়। কনটেইনার জট কমাতে তেলবাহী ট্রেনের সংখ্যা কমিয়ে কনটেইনারবাহী ট্রেন তিনটিতে উন্নীত করা হয়েছে।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের যান্ত্রিক প্রকৌশল দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ইঞ্জিনসংকট এতটাই প্রকট যে পণ্যবাহী ট্রেন চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সামনে ঈদের সময় যাত্রীবাহী ট্রেনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, ফলে কনটেইনার পরিবহনে যে সাময়িক স্বস্তি এসেছে, তা আবারও ব্যাহত হতে পারে।