
সম্পাদকীয়:বাংলাদেশের ব্যাংক–বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে, যেখানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থান সবচেয়ে খারাপ, যেখানে খেলাপি ঋণ প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এফএএস ফিন্যান্স, ফারইস্ট ফিন্যান্স, বিআইএফসি এবং পিপলস লিজিং-এর মতো প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশের আর্থিক খাতে অস্থিতিশীলতার একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাস শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ বেড়ে ২৬ হাজার ১৬৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা মোট ঋণের ৩৫ শতাংশেরও বেশি। এর ফলে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণও বেড়েছে, কারণ ব্যাংকগুলোতে লুকানো খেলাপি ঋণ এখন প্রকাশ্যে এসেছে। তদারকি বৃদ্ধি পাওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও, তহবিল সংকট এবং গ্রাহকদের আস্থা হারানো অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে এনেছে।
তবে, কিছু প্রতিষ্ঠান যেমন আইডিএলসি, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স, লঙ্কা–বাংলা ফাইন্যান্স এবং স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স এখনও সঠিকভাবে চলমান রয়েছে, যেখানে খেলাপি ঋণ মাত্র ১০ শতাংশের নিচে। এসব প্রতিষ্ঠানের ভালো ব্যবস্থাপনা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কারণে তারা কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে।
তবে, মোটের ওপর, দেশের আর্থিক খাতে তীব্র অস্থিরতা ও সংকট চলমান, এবং তা কাটাতে হলে কার্যকরী নীতিমালা ও কঠোর তদারকির প্রয়োজন।