
প্রতিবেদক: সম্প্রতি সচিবালয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের বিষয়ে বেসরকারি খাত কেন বছরের পর বছর নীরব থেকেছে এবং এখন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তা ভেবে দেখা দরকার।
তিনি বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে সুষ্ঠুভাবে উত্তরণের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি বেসরকারি খাতের দাবির সাথে একমত বা দ্বিমত পোষণ করতে পারছি না। এটি একটি দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতি। আমরা যদি তাদের সাথে একমত হই, তাহলে প্রয়োজনীয় সংস্কার আবার পিছিয়ে যাবে।”
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও জানান, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এলডিসি উত্তরণের তিনটি মানদণ্ডই পূরণ করেছে। তবে তা সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে হয়েছে, নাকি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে।
তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের অনিয়মের কারণে আমাদের সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে আমাদের টিম আন্তরিকতা ও দেশপ্রেমের সাথে কাজ করছে, ইনশাআল্লাহ, আমরা দেশের জন্য একটি কল্যাণকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারব।”
এদিকে, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের একাংশ এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা কয়েক বছর পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে। তারা যুক্তি দিচ্ছেন, মহামারির প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং উচ্চ বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশকে আরও সময় দেওয়া উচিত।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সরকার জাতিসংঘের নির্ধারিত সময়সূচি মেনেই উত্তরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এর প্রভাব বিশ্লেষণ করতে বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ এলডিসি তালিকা থেকে বের হলে, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে পাওয়া শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা আর থাকবে না। ফলে বাংলাদেশ বছরে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বাণিজ্য সুবিধা হারাতে পারে এবং রপ্তানির ওপর ১২ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হতে পারে।
তবে উত্তরণের পর তিন বছর পর্যন্ত এই সুবিধাগুলো বহাল থাকবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০২৯ সাল পর্যন্ত এই সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও কিছু শর্তসাপেক্ষে একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির সাফল্যের পেছনে এলডিসি সুবিধার বড় ভূমিকা ছিল। তাই উত্তরণের পর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সরকার ও ব্যবসায়ীদের যৌথভাবে কৌশল গ্রহণ করতে হবে।