জ্বালানি তেল মজুদের সক্ষমতা ২ লাখ টন বাড়াতে ৬টি নতুন ট্যাংক

প্রতিবেদক: বাংলাদেশে বর্তমানে জ্বালানি তেলের মজুদ সক্ষমতা চাহিদার তুলনায় কম। সাধারণত একটি দেশে অন্তত ৬০ দিনের জন্য জ্বালানি তেল মজুদ থাকা উচিত, তবে বর্তমানে দেশে গড়ে মাত্র ৪০ দিনের মজুদ সক্ষমতা রয়েছে। এ অবস্থায় সংকট মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মাধ্যমে চট্টগ্রামে নতুন ট্যাংক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

নতুন পরিকল্পনায় চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের বাইরে প্রায় ৫২ হাজার টন ধারণক্ষমতার ছয়টি ট্যাংক নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৩২ হাজার টনের তিনটি এবং চট্টগ্রামের বাইরে ১৭ হাজার টনের তিনটি ট্যাংক নির্মাণের কাজ চলছে। বিপিসি নিজেই এই প্রকল্পের পুরো ব্যয় বহন করবে এবং কোম্পানিগুলোকে তাদের কর্মপরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে জ্বালানি তেলের মোট মজুদ সক্ষমতা ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ টন। এর মধ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারি, পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা অয়েল এবং অন্যান্য কোম্পানির ডিপোগুলোতে বিভিন্ন পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুদ রয়েছে।

চট্টগ্রামে ৩২ হাজার টনের তিনটি ট্যাংক, গোদনাইলে ৫ হাজার টনের একটি এবং আলীগঞ্জে ১৫ হাজার টনের দুটি ট্যাংক নির্মাণের কাজ চলছে। যমুনা অয়েল কোম্পানিতে মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে, এবং পদ্মা ও মেঘনা অয়েলের ডিপোতে মাটি পরীক্ষার কাজ চলছে।

এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৮০০ টন নতুন মজুদ সক্ষমতা তৈরি হবে। এর মধ্যে এসপিএম প্রকল্পের মাধ্যমে দুই লাখ টন, নারায়ণগঞ্জ থেকে কুর্মিটোলা পর্যন্ত পাইপলাইন প্রকল্পে ৯ হাজার টন, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পে ২১ হাজার টন এবং ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পে ২৮ হাজার ৮০০ টন ডিজেল মজুদ করা যাবে।

বিপিসির কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, নতুন ট্যাংক স্থাপন হলে জ্বালানি তেলের মূল্য যখন কম থাকে, তখন মজুদ করা সম্ভব হবে, এবং সংকটের সময়ে সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে।

বিপিসির মহাব্যবস্থাপক মণি লাল দাশ বলেন, “জাতীয় জ্বালানি নীতি অনুযায়ী ৬০ দিনের মজুদ রাখা প্রয়োজন, তবে আমাদের সক্ষমতা কম। চট্টগ্রামের প্রধান ডিপো এলাকায় নতুন ট্যাংক স্থাপন করলে মজুদ সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং সংকটকালীন সময়ে সরবরাহের নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে।”

এখন পর্যন্ত গোদনাইলে ৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার একটি ট্যাংক নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং মে মাসে এর কমিশনিং শুরু হবে। মেঘনা পেট্রোলিয়ামের আলীগঞ্জ ডিপোতে ১৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার দুটি ট্যাংক নির্মাণের কাজ চলছে।

এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে বিপিসি দেশের জ্বালানি তেল মজুদ সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবে, যা ভবিষ্যতে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।