
প্রতিবেদক: চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৮০০ একর জমিতে একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এই প্রকল্পটিকে ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২২১.১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা) চীন সরকারের কাছ থেকে প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট হিসেবে পাওয়ার কথা রয়েছে। বাকি ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ১ শতাংশ সুদে দেবে—এমন প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, “চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ ফাস্ট-ট্র্যাক করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমরা নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করতে চাই, কারণ এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও আগ্রহ বাড়াবে।”
প্রকল্পটির নাম ‘সাপোর্টিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্ট ফর চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন । এটি ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয় ও একনেকের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর আগামী জুলাই থেকে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় একটি জেটি নির্মাণ, সেখান থেকে CIEZ-এ সংযোগ সড়ক, কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।
চীন সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন সরকার-থেকে-সরকার ভিত্তিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি ২০২৯ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বেজা আরও জানিয়েছে, চাঁদপুরে সরকার-থেকে-সরকার ভিত্তিতে আরেকটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ভোলায় একটি চীনা কোম্পানির জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কর্ণফুলী টানেল, সমুদ্রবন্দর এবং বিমানবন্দরের মতো অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এই অঞ্চলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ক্লাস্টার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে। চীনা স্টেকহোল্ডারদের মতে, এই অর্থনৈতিক অঞ্চল চীনা বিনিয়োগে গতি আনবে, বাংলাদেশের শিল্পখাতে প্রযুক্তি উন্নয়ন সহজতর করবে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিকে গতিশীল করবে।
এছাড়া, বৃহত্তর প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শিল্প ক্লাস্টার ও আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের সহায়ক প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনের মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ২.৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে এসেছে ১.৪১ বিলিয়ন ডলার এবং হংকং থেকে এসেছে ১.২৬ বিলিয়ন ডলার।