বিদেশি বিনিয়োগে গতি আনতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে সরকার

প্রতিবেদক: বিদেশি বিনিয়োগে গতি আনতে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ—এফডিআই—আকৃষ্ট করতে প্রণোদনা দেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার এবং বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন (সদস্যসচিব হিসেবে)।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে কী ধরনের প্রণোদনা কার্যকর হতে পারে, তা বিশ্লেষণ করে এক মাসের মধ্যে সুপারিশ দিতে হবে কমিটিকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নিট এফডিআই এসেছে ১২৭ কোটি ৩ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরে এ পরিমাণ ছিল ১৪৬ কোটি ডলার—কমেছে প্রায় ১৯ কোটি ডলার বা ১৩ শতাংশের বেশি।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) নিট এফডিআই আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৮৬ কোটি ডলারে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এটি ছিল ১১৬ কোটি ডলার—এ অর্থে বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ২৬ শতাংশ।

সরকারি সংজ্ঞা অনুযায়ী, কোনও বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন, নতুন প্রকল্পে অর্থায়ন বা স্থানীয় কোম্পানির শেয়ার কিনলে তা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হয়। তবে সেই বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা বা শেয়ার বিক্রির অর্থ বিদেশে পাঠানো হলে, তাকে বলা হয় ‘এফডিআই আউটফ্লো’। নিট এফডিআই নির্ধারিত হয় মোট এফডিআই থেকে আউটফ্লো বাদ দিয়ে।

সরকার মনে করছে, সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবভিত্তিক প্রণোদনা কাঠামো তৈরি হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। এতে একদিকে যেমন অর্থনীতিতে মূলধন প্রবাহ বাড়বে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও উৎপাদনশীলতা বাড়ার মতো ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।