নারীর অবৈতনিক সেবামূলক কাজকে জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার অঙ্গীকার দিয়েছে অর্থমন্ত্রী

প্রতিবেদক: ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট বক্তৃতায় নারীর অবৈতনিক বা অস্বীকৃত সেবামূলক কাজকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এই কাজগুলোকে জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অর্থ উপদেষ্টার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে মানবাধিকারভিত্তিক সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জেন্ডার সমতা অর্জনের জন্য জাতীয় বাজেটে নারীর গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিরাচরিত অর্থনৈতিক সূচকগুলোর কারণে নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালি শ্রমের অবদান প্রায়ই অদৃশ্য থেকে যায়।”

এমজেএফ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নারীর এই অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। সংস্থাটি মনে করে, স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্টের (পরিপূরক হিসাব পদ্ধতি) মাধ্যমে এ কাজের অর্থমূল্য নির্ধারণ করে যদি জাতীয় আয় বা জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তবে তা হবে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এতে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে, তাঁর প্রতি বিদ্যমান নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ বাড়বে এবং সমাজে ও পরিবারের ভিতরে তাঁর প্রতি সহিংসতা হ্রাস পাবে।

এমজেএফের উদ্যোগে পরিচালিত সিপিডির এক জরিপে দেখা গেছে, নারীর অবৈতনিক সেবামূলক কাজের আর্থিক মূল্য তাঁদের বেতনভুক্ত শ্রম থেকে প্রাপ্ত আয়ের চেয়ে প্রায় ২.৫ থেকে ২.৯ গুণ বেশি।

শাহীন আনাম আশা প্রকাশ করেন, বাজেট বক্তৃতায় ঘোষিত অঙ্গীকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, নারীর সমান অধিকার নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) পঞ্চম লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ বাস্তব পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে।