
প্রতিবেদক: টানা দুই মেয়াদ পর পর বাণিজ্য সংগঠনের নির্বাহী কমিটিতে দায়িত্ব পালনের পর একবার বিরতি দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের যে বিধান ‘বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫’-এ রাখা হয়েছে, সেটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ।
পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বিধান ভবিষ্যতের পাশাপাশি বিগত সময়ের জন্যও প্রযোজ্য করায়, বর্তমান ও সাবেক অনেক নেতার নির্বাচন করার অধিকার খর্ব হচ্ছে। একে মৌলিক ভোটাধিকার ও সংগঠনের সদস্যদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে তারা এই বিধান অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে।
পরিষদের আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন গত রোববার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বরাবর চিঠি দিয়ে বাণিজ্য বিধিমালার ১৮(৫) উপবিধি বাতিলের দাবি জানান। পরিষদের প্রস্তাব, ভবিষ্যতে যদি এই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করাও হয়, তা যেন ‘প্রসপেকটিভলি’, অর্থাৎ ভবিষ্যতের জন্য কার্যকর হয়, অতীতে প্রযোজ্য না হয়।
নতুন বিধিমালায় বিভিন্ন ফি ও চাঁদা অতিরিক্ত হারে বাড়ানো হয়েছে বলেও আপত্তি জানিয়েছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। তারা বলেছে।এত দিন অ্যাসোসিয়েশন বা চেম্বারে সাধারণ সদস্যদের ভর্তি ফি সর্বোচ্চ ছিল ২ হাজার টাকা, আর বার্ষিক চাঁদা ১ হাজার টাকা।
নতুন বিধিমালায় এই ফি যথাক্রমে ১৫ হাজার ও ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সদস্যপদ পেতে অনাগ্রহী হয়ে পড়বে।
এ ছাড়া, নতুন বিধিমালায়—ক’ শ্রেণির অ্যাসোসিয়েশন–এর বার্ষিক চাঁদা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ২৫ হাজার এবং পরবর্তী সময়ে ৩৫ হাজার।ক’ শ্রেণির চেম্বার–এর চাঁদা করা হয়েছে ১ লাখ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ হাজার, পরে ৪৫ হাজার।
তারা বলেছে, এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মফস্বলের চেম্বার ও ছোট অ্যাসোসিয়েশনগুলোর জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন বিধিমালায় এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ পরিষদের সদস্যদের নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। এই অতিরিক্ত ফি বাতিলেরও দাবি জানিয়েছে পরিষদ।
এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রশাসকের অধীনে গঠিত সহায়ক কমিটি নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। তাদের অভিযোগ, এই কমিটির সঙ্গে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের প্রার্থীদের সরাসরি যোগসাজশ রয়েছে। ফলে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সহায়ক কমিটি বাতিল করা প্রয়োজন।
সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের দাবি, নতুন বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালার কিছু অংশ গণতান্ত্রিক চর্চা ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব বিধান সংশোধনের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও সকলের জন্য উন্মুক্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
Top of Form
Bottom of Form