লজিস্টিক ব্যয় ২৫ শতাংশ বেশি, সমাধানে চাই পরিবহন নীতি ও রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা: বাণিজ্য উপদেষ্টা

প্রতিবেদক: বাংলাদেশে লজিস্টিক বা পণ্য সরবরাহ ও বিতরণ ব্যয় অনেক বেশি, যা রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই ব্যয় বিশ্বমানের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। এই অতিরিক্ত ব্যয় কমানো গেলে রপ্তানি অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) আয়োজিত “কনডাকটিভ অটোমোবাইল পলিসি ফর গ্রিন গ্রোথ অ্যান্ড কম্পিটিটিভ ইকোনমি” শীর্ষক কর্মশালায় এই আলোচনা হয়। রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সমন্বিত অর্থনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে বিনিয়োগ ও ঋণের নামে অর্থের অপব্যবহার হয়েছে। “এক টাকার জিনিস ২০ টাকায় করা হয়েছে, পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে, আর্থিক দায় সৃষ্টি হয়েছে। এই ধারা টেকসই নয়, এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি জানান, দেশের জনমিতিক সুবিধাকে কাজে লাগাতে হলে সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন অপরিহার্য। এজন্য পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী উপায়ে পরিবহন ব্যবস্থার দিকে যেতে হবে। তিনি বলেন, “আমাদের দেশে অন্তত ২০০টি নদী রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে নৌপথে সস্তায় পণ্য পরিবহন করা সম্ভব।” পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে সমন্বিত নীতি গ্রহণের ওপরও জোর দেন তিনি।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. মাশরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের লজিস্টিক খাতে ব্যয় বেশি হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে দুর্বল অবকাঠামো ও পরিবহন ব্যবস্থা। উন্নত প্রযুক্তির যানবাহন আমদানি এই সমস্যা দূর করতে সহায়ক হতে পারে। উন্নত দেশ থেকে আমদানিকৃত ব্যবহৃত গাড়িও পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর হতে পারে।

রিকন্ডিশন্ড ভেহিকল ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি মো. আব্দুল হক বলেন, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহৃত গাড়িকে “পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর” আখ্যা দিয়ে দেশে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অথচ জাপানের মতো দেশ থেকে আনা ব্যবহৃত গাড়ি পরিবেশবান্ধব এবং অনেক বেশি কার্যকর। তাই এসব গাড়ির আমদানিতে সহনশীল নীতি প্রয়োজন।

উত্তরা মোটর্সের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, দেশের অটোমোবাইল সংযোজন খাতে তেমন ভ্যালু এডিশন হচ্ছে না। পুরোনো অটোমোবাইল নীতিকে এনবিআর নিজের মতো করে পরিবর্তন করে জটিল করে ফেলেছে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।