
প্রতিবেদক: আগামী ছয় মাসের জন্য সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ ১ জুলাই (২০২৫) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। গতকাল সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ মুনাফার হার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন হার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। কম বিনিয়োগে সুদের হার তুলনামূলক বেশি, আর বেশি বিনিয়োগে সুদের হার কম। এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সীমা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর কম হলে বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে, বেশি হলে সুদের হার কিছুটা কমে আসবে।
২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত থাকার পর এবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও কমানো হলো। অন্যদিকে, দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় দেশে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। ফলে সঞ্চয়পত্রে নির্ভরশীল বহু মধ্যবিত্ত পরিবার এখন আর্থিক চাপে পড়বে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীন সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্রে এত দিন সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মুনাফার হার ছিল ১২.৫০ শতাংশ। এখন তা কমিয়ে করা হয়েছে ১১.৯৩ শতাংশ। একই পণ্যে সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১২.৩৭ শতাংশ থেকে কমে ১১.৮০ শতাংশে নামানো হয়েছে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পূর্বের মুনাফা ছিল ১২.৫৫ শতাংশ; এখন তা কমে ১১.৯৮ শতাংশ হয়েছে। একইসঙ্গে, বেশি বিনিয়োগের মুনাফা ১২.৩৭ শতাংশ থেকে কমে ১১.৮০ শতাংশে নেমে এসেছে।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মুনাফার হার ছিল ১২.৪০ শতাংশ, যা এখন ১১.৮৩ শতাংশ। আর বেশি বিনিয়োগে হার হয়েছে ১১.৮০ শতাংশ।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রেও সুদের হার কমেছে। সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে আগের মুনাফা ছিল ১২.৩০ শতাংশ, যা কমে ১১.৮২ শতাংশ হয়েছে। বেশি বিনিয়োগে তা ১১.৭৭ শতাংশে নেমেছে।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের মেয়াদি হিসাবেও মুনাফার হার কমানো হয়েছে। তিন বছর মেয়াদ পূর্ণ হলে এবং সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মুনাফার হার ছিল ১২.৩০ শতাংশ, যা এখন ১১.৮২ শতাংশ। আর বেশি বিনিয়োগে এ হার ১১.৭৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে কিছু বন্ডে আগের হার বহাল থাকবে। ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাব—এগুলোর মুনাফার হার অপরিবর্তিত থাকবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ১ জুলাই ২০২৫ সালের আগে ইস্যু হওয়া সঞ্চয়পত্রে আগের হারই প্রযোজ্য থাকবে, তবে পুনর্বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। ছয় মাস পর নতুন করে আবার মুনাফার হার পুনর্নির্ধারণ করা হবে।