
প্রতিবেদক: ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানিতে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ সময় এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখনও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পোশাক রপ্তানি বাজার। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে এই অঞ্চলে রপ্তানি হয়েছে ১৯ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রপ্তানির ৫০ দশমিক ১০ শতাংশ। এর মধ্যে জার্মানিতে রপ্তানি সর্বাধিক—৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর রয়েছে স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, ইতালি ও ডেনমার্ক। বিশেষভাবে নেদারল্যান্ডসে ২১ দশমিক ২১ শতাংশ, সুইডেনে ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং পোল্যান্ডে ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি আয় হয়েছে ৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার (১৯ দশমিক ১৮ শতাংশ), যুক্তরাজ্যে ৪ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার (১১ দশমিক ০৫ শতাংশ), আর কানাডায় ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার (৩ দশমিক ৩১ শতাংশ)। রপ্তানিতে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে রপ্তানি ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে ৬ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা মোট রপ্তানির ১৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এই বাজারে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত গুরুত্বপূর্ণ। তুরস্কে রপ্তানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ৬২ শতাংশ, ভারতে ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং জাপানে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। তবে রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি কমেছে।
২০২৪–২৫ অর্থবছরে নিটওয়্যার খাতে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ ও ওভেন খাতে ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী তৈরি পোশাকের বাজারের আকার ছিল প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে নন-ট্র্যাডিশনাল বাজার ১৫০ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ এখান থেকে মাত্র ৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব ধরে রেখেছে। তবে ভবিষ্যতের জন্য এই বাজারে বিস্তারের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালে জাপানের পোশাক আমদানির ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ এসেছে বাংলাদেশ থেকে।
বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, নতুন বাজারে প্রবেশ ও উদ্ভাবন এখন কৌশলের চেয়েও বেশি—এটি একটি অপরিহার্যতা। তিনি আরও বলেন, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু দামের ওপর নির্ভর না করে ক্রেতার আস্থা অর্জনের মতো সুবিধা তৈরি করতে হবে, যেন ক্রেতারা বারবার বাংলাদেশকেই বেছে নেয়।