ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ

প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কিন ডলারের দাম স্বাভাবিক রাখতে ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনছে। সরবরাহ বাড়ার ফলে ডলারের দাম কমেছে। গত দুই দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৪৮ কোটি ডলার কিনেছে, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে।

সূত্র জানায়, বাজারভিত্তিক ডলার বেচাকেনার কারণে মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন রেমিট্যান্সের ডলার সংযতভাবে কম দামে কিনছে, ফলে ব্যবসায়ীরা ডলার পাচ্ছেন তুলনামূলক কম দামে। উদ্বৃত্ত ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে কিনে নিচ্ছে, যাতে দামের অস্থিরতা কমে।

বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করেন, ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা আসায় আমদানি বিধিনিষেধ শিথিল করার সময় এসেছে। বিলাসপণ্য আমদানির ওপর দেওয়া অতিরিক্ত শর্তগুলোও তুলে নেওয়া উচিত, যাতে বাণিজ্যে গতি ফেরে।

টানা চার দিন কমার পর গতকাল (মঙ্গলবার) ডলারের দাম আবার বেড়েছে। এদিন ডলারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১২১ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন ১২০ টাকা ৮০ পয়সা। গড় বিক্রয়মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় ১২১ দশমিক ১১ টাকা, যা একদিনে ১ টাকা ৪০ পয়সা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।

গতকাল নিলামের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে, যা সরবরাহ করেছে ২২টি ব্যাংক। প্রতি ডলারের দাম ছিল ১২১ টাকা ৫০ পয়সা। এর আগে গত রোববার আরও ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, বকেয়া আমদানি বিল পরিশোধ হয়ে যাওয়ায় এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ায় ডলারের ওপর চাপ কমেছে। ফলে বাজারে ডলারের ঘাটতি নেই। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডলার কিনছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, তিন বছর ধরে দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতির পেছনে অন্যতম কারণ ছিল ডলারের উচ্চ দাম। ডলার সস্তা হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অন্তর্বর্তী সরকারেরও মূল লক্ষ্য এটি নিয়ন্ত্রণ করা। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে, বর্তমানে ডলারের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আছে এবং তা ধরে রাখার চেষ্টা চলছে।

বর্তমানে প্রবাসী আয়ের ডলার ১২১ টাকায় কেনা হচ্ছে, যা এক মাস আগে ছিল ১২৩ টাকার ওপরে। ডলারের দাম কমলেও রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। তবে ব্যবসায়িক স্থবিরতা ও আমদানিতে গতি না থাকায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের চাহিদা কমে গেছে।