
প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি নিয়ে তৃতীয় দফার আলোচনা কবে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। চলতি জুলাই মাসের মধ্যে এই আলোচনা না-ও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা জানিয়েছেন, সময় চেয়েও বারবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাড়া না পাওয়ায় আলোচনার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। একই সঙ্গে লবিস্ট নিয়োগের প্রচেষ্টাও কার্যত থেমে গেছে।
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনো আশাবাদী। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে এবং এই আলোচনার মাধ্যমে একটি ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে তাঁরা আশাবাদী। এমনকি নতুন শুল্কহার কার্যকরের সময়সীমাও হয়তো বাড়ানো হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এদিকে, ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তা সত্ত্বেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ এখনো রয়েছে। তবে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের মনোভাবও এ বিষয়ে নিরুৎসাহজনক। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত দরকার। লবিস্টরা দর-কষাকষির সুযোগই পাবে না। তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছাকাছিও যেতে পারবে না।
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভালো। শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি ও মেটলাইফের মতো মার্কিন কোম্পানির বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এসবের কারণে ইউএস চেম্বার আমাদের ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বাড়ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলছে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১০৮ কোটি ডলার বেশি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য।
এই প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। গত মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদসহ কয়েকজন রপ্তানিকারকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ কে আজাদ বলেন, “লবিস্ট নিয়োগ হবে না বলেই ধরে নিচ্ছি। এখন সেটা করেও কতটা লাভ হবে, তা অনিশ্চিত।”
এদিকে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি গম আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি ও সরকারি ক্রয় কমিটি ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। সরবরাহ করবে অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতি টনের দাম নির্ধারিত হয়েছে ৩০২.৭৫ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় প্রায় ৮১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, আমরা আমদানি উৎসে বৈচিত্র্য আনতে চাই। রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আমদানিতে মাঝে মাঝে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গমের গুণগত মান ভালো এবং এতে আমিষের মাত্রাও কিছুটা বেশি।