মার্কিন পাল্টা শুল্ক কমে ২০ শতাংশ হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান

প্রতিবেদক:  শুক্রবার এক বার্তায় তিনি জানান, গত তিন মাস ধরে পাল্টা শুল্ক নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা–বাণিজ্য পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। মার্কিন ক্রেতারাও পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হওয়াকে তিনি ‘স্বস্তিদায়ক’ বলে অভিহিত করেন।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলে আসছিলাম, প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের ওপর শুল্ক বেশি হলে ব্যবসা কঠিন হয়ে যাবে। এখন পাকিস্তানের তুলনায় আমাদের পাল্টা শুল্ক ১ শতাংশ বেশি হলেও, ভারতের চেয়ে ৫ শতাংশ এবং চীনের চেয়ে ১০ শতাংশ কম—এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, বাড়তি শুল্কের কারণে সাময়িকভাবে ব্যবসায় মন্দা দেখা দিতে পারে। কারণ মার্কিন ক্রেতাদেরকে আগের তুলনায় বেশি শুল্ক গুণতে হচ্ছে, যা তাদের মূলধনের ওপর চাপ তৈরি করছে। যদি তারা অতিরিক্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে না পারে, তাহলে ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিতে পারে। পাশাপাশি, বাড়তি শুল্ক পণ্যের দাম বাড়াবে, যার প্রভাব পড়বে শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর—বিক্রি কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি মনে করিয়ে দেন, গত এপ্রিলে প্রথম দফায় ট্রাম্প প্রশাসন সব দেশের পণ্যের ওপর অন্তত ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করে। সেই বাড়তি শুল্ক কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরবরাহকারীদের ওপরও পড়েছে। তিনি বিজিএমইএর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “এই বাড়তি শুল্ক মূলত আমদানিকারক ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে দিতেই হবে। শেষ পর্যন্ত সেটি গিয়ে পড়বে মার্কিন ভোক্তার ওপর।

তিনি আরও বলেন, “চীনের ওপর এখনো ৩০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বহাল আছে। শিগগিরই তাদের চূড়ান্ত শুল্কহার ঘোষণা করা হবে। তবে যতটুকু আভাস পাওয়া গেছে, চীনের শুল্ক আমাদের চেয়ে কম হবে না। ফলে ক্রয়াদেশ বাংলাদেশের দিকে সরে আসতে পারে।” এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে জ্বালানি সরবরাহ, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা—এসব বিষয় অনুকূলে থাকতে হবে বলে তিনি মত দেন।

পরিশেষে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “যেহেতু আমরা এখনো মার্কিন চুক্তির বিস্তারিত দেখিনি, আশা করি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল দেশের স্বার্থ রক্ষা করেই চুক্তিটি সম্পাদন করেছেন। তবে গম, তুলা, এলএনজি ও উড়োজাহাজ কেনার মতো প্রতিশ্রুতিগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে আমরা ফের বিপদে পড়তে পারি।”