যুক্তরাষ্ট্রে পাল্টা শুল্ক ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর, বাংলাদেশের গড় শুল্কহার দাঁড়াচ্ছে ৩৫%

প্রতিবেদক: ৭ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাল্টা শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের পণ্যে গড় শুল্কহার দাঁড়াবে প্রায় ৩৫ শতাংশ। আগে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যে গড় শুল্কহার ছিল ১৫ শতাংশ, এখন ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক যুক্ত হয়ে এই হার বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন ও ট্যারিফ শিডিউল অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশ দেশটিতে মোট ১,২০৪টি পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে পণ্যভেদে শুল্কহার ছিল ০% থেকে ৩৫০% পর্যন্ত। এবার পাল্টা শুল্ক যুক্ত হওয়ায় বেশ কিছু পণ্যে উল্লেখযোগ্য হারে শুল্ক বাড়বে।

সর্বোচ্চ শুল্ক পড়বে প্রক্রিয়াজাত তামাকজাত পণ্যে। এই পণ্যে আগে থেকেই ৩৫০% শুল্ক ছিল, এখন পাল্টা শুল্ক মিলিয়ে তা দাঁড়াবে ৩৭০%। তবে বাংলাদেশ থেকে এ পণ্যের রপ্তানি পরিমাণ খুবই কম—গত বছর মাত্র ৭৪ হাজার ডলারের তামাকজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

চামড়াবিহীন বিশেষ জুতা (রাবার ও কাপড় দিয়ে তৈরি) পণ্যে এখন শুল্ক ৫৫% থাকলেও পাল্টা শুল্কসহ তা বেড়ে দাঁড়াবে ৭৫%। এই পণ্য রপ্তানিও কম, মাত্র ৭৪ হাজার ডলার মূল্যের। একইভাবে কম দামি জুতা (প্রতি জোড়া ৩ ডলারের কম) পণ্যে শুল্ক হবে ৬৮%।

পানিরোধী রাবার বা প্লাস্টিকের জুতা ছয় ক্যাটাগরির পণ্যে শুল্ক ৩৭.৫% থেকে বাড়বে ৫৭.৫%। গত বছর বাংলাদেশ এই পণ্য রপ্তানি করেছে প্রায় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ডলারের।

পোশাক খাতে, কৃত্রিম তন্তুর তৈরি টি–শার্ট, শার্ট, সোয়েটার ইত্যাদিতে আগে শুল্কহার ছিল ৩২%, এখন তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫২%। এই সাত ধরনের পণ্য থেকেই গত বছর বাংলাদেশ ২৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের রপ্তানি করেছে।

কৃত্রিম চামড়ার জুতা (প্রতি জোড়া দাম ৬.৫ থেকে ১২ ডলার) পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র মূল্যের ২০% ও অতিরিক্ত ৯০ সেন্ট করে শুল্ক নেয়—সব মিলিয়ে এই পণ্যে গড়ে ৫১% হারে শুল্ক আদায় করা হয়। বাংলাদেশ গত বছর ৪ লাখ ৯০ হাজার ডলারের এমন জুতা রপ্তানি করেছে।

শিশুদের সোয়েটার, নারী ও শিশুদের আউটওয়্যার, স্কি স্যুট, ব্লেজার, জ্যাকেট, এবং ছেলেদের প্যান্ট ও মেয়েদের স্যুট প্রভৃতি কৃত্রিম তন্তুর পোশাক পণ্যে গড়ে ২৮% থেকে ৩০% পর্যন্ত শুল্কহারে এখন নতুন শুল্ক যুক্ত হয়ে হার দাঁড়াবে প্রায় ৪৮% থেকে ৫০% পর্যন্ত। এই সব পণ্য মিলিয়ে গত বছর বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে প্রায় ৬৫ কোটি ডলারের উপরে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৪৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্যের অংশ তুলনামূলকভাবে কম। ফলে রপ্তানিকারকেরা মনে করছেন, পাল্টা শুল্কে খরচ বাড়লেও রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না।

চট্টগ্রামের ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যাপারেলস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “পরিমাণে কম হলেও বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শুল্কের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু খরচ বাড়লেও প্রভাব তুলনামূলক কম হবে, কারণ প্রতিযোগী দেশগুলোতেও প্রায় একই ধরনের শুল্কহার প্রযোজ্য।