চট্টগ্রাম বন্দরের তিন টার্মিনালে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ হবে ডিসেম্বরের মধ্যে

প্রতিবেদক: বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি, লালদিয়া ও বে টার্মিনাল পরিচালনার জন্য অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। রোববার বন্দরের ৪ নম্বর ফটকে ব্যবহারকারীদের জন্য সেবা ডেস্ক উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা জানান।

বিদেশি অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয় গত আগস্টে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। এর মধ্যে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে (এনসিটি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড, লালদিয়ার চরের টার্মিনালে নেদারল্যান্ডসের এপিএম টার্মিনালস এবং বে টার্মিনালের একটিতে ডিপি ওয়ার্ল্ড ও অন্যটিতে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনালকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করেছে সরকার। চারটির মধ্যে শুধু এনসিটিই এখন প্রস্তুত; এটি বর্তমানে পরিচালনা করছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। বাকি তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ করে পরিচালনার জন্য বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।

আশিক চৌধুরী বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে বন্দরগুলোতে কিছু রূপান্তর ঘটিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে, যাতে নির্বাচনের পর নতুন রাজনৈতিক সরকার আসলেও কাজ থেমে না থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে নিতে হলে সেরা অপারেটর নিয়োগ অপরিহার্য বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও জানান, বন্দর পরিচালনায় অটোমেশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যার ফলে আগে সশরীর কাগজ জমা দিয়ে যে কাজ করতে হতো, এখন তা অনলাইনে এক ক্লিকেই করা যাবে। এতে সময় সাশ্রয় হবে, দুর্নীতি ও হেনস্তার অভিযোগ কমবে এবং ভবিষ্যতে বন্দরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার  ব্যবহারও দেখা যেতে পারে।

নৌবাহিনীর হাতে এনসিটি হস্তান্তরের পর প্রথম এক মাসেই কনটেইনার ওঠা–নামার হার প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে এবং জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের সময় প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে বলে জানান আশিক চৌধুরী। গত অর্থবছরে এই টার্মিনালে ১৩ লাখ কনটেইনার ওঠানো–নামানো হলেও চলতি বছর তা বেড়ে ১৭ লাখে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা চার থেকে পাঁচ গুণ বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে পণ্য খালাসের সময়সীমা কমিয়ে আনা হবে, যাতে বাংলাদেশ ভিয়েতনামের চেয়েও দ্রুত পণ্য খালাস করতে পারে।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।