
প্রতিবেদক: ডাচ্–বাংলা ব্যাংক (ডিবি) প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্থিক সেবা সহজলভ্য করে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এটিএম বুথ ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ব্যাংকটি সার্বক্ষণিক নগদ চাহিদা মেটাচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাংক হিসাব খোলাকে অগ্রাধিকার দেয়ায় নতুন প্রজন্মও ব্যাংকিংয়ের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
ডিবি ব্যাংক প্রমাণ করেছে, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি একসঙ্গে সম্ভব। দেশের প্রথম মোবাইল আর্থিক সেবা ‘রকেট’ চালুর মাধ্যমে লাখো মানুষকে ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত করানো হয়েছে। শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার মাধ্যমে ব্যাংকটি সমাজের জন্য একটি উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছে। এসব কারণে ব্যাংকটি সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই ব্যাংক তালিকায় স্থান পেয়েছে।
ডাচ্–বাংলা ব্যাংক প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা তাৎক্ষণিক মুনাফার জন্য নয় বরং টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থার ভিত্তি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই করা হয়েছে। ব্যাংকটি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের পাশাপাশি সুশাসন ও সেবার মান বজায় রাখতেও নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা পৌঁছে দিয়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির পরিসর বৃদ্ধি করেছে।
১৯৯৬ সালে দেশি–বিদেশি যৌথ উদ্যোগে যাত্রা শুরু করা ডিবি ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে একাধিক মাইলফলক স্থাপন করেছে। ২০০৩ সালে দেশের প্রথম অনলাইন ব্যাংকিং সেবা চালু করে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। এরপর এটিএম বুথ ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা সহজলভ্য করা হয়। ২০১১ সালে চালু হওয়া মোবাইল আর্থিক সেবা ‘রকেট’ দেশের আর্থিক লেনদেনের ধারাকে বদলে দিয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে ব্যাংকিং লেনদেন আরও সুবিধাজনক হয়েছে।
বর্তমানে ডিবি ব্যাংকের ৮,৫৮৬টি এটিএম ও সিআরএম বুথ দেশের সর্বত্র গ্রাহক সেবায় নিয়োজিত। ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং অন্যান্য ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে ব্যাংকটি একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।
ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের ঋণ পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যপূর্ণ; করপোরেট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) ও খুচরা ঋণ সমন্বিত। মোট ঋণের ১৯% খুচরা ঋণ, ১৪% এসএমই খাতে বিনিয়োগ এবং বাকিটা করপোরেট ঋণ। ২০২৪ সালের শেষে মোট ঋণ ছিল ৪২,৮৬৯ কোটি টাকা এবং আমানত ৫২,১৮৭ কোটি টাকা।
ব্যাংকটির ২৪৩টি শাখা ও ৩০৭টি উপশাখা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাহকসেবা প্রদান করছে। মোট গ্রাহকসংখ্যা ৫ কোটি ৭৭ লাখ, যার মধ্যে ২ কোটি ৩৬ লাখ নারী। গত বছরে ব্যাংক নিট মুনাফা করেছে ৪৭৩ কোটি টাকা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে ব্যয় করেছে ৩৬ কোটি টাকার বেশি, যা তাদের সমাজপ্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
সব মিলিয়ে, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সাফল্যের মূল হলো প্রযুক্তির সঙ্গে তাদের দৃঢ় সংযোগ এবং সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা।