আস্থার ব্যাংকে ভিড়: ব্র্যাক ও ইসলামী ব্যাংকে আমানত ঊর্ধ্বমুখী

প্রতিবেদক: দেশের কিছু ব্যাংক গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে হিমশিম খাচ্ছে, অথচ অন্য কয়েকটি ব্যাংকে আমানত উপচে পড়ছে। ভালো ব্যাংক হিসেবে পরিচিত এসব প্রতিষ্ঠানে সুদের হার বেশি না হলেও গ্রাহকেরা টাকা জমা দিতে প্রতিনিয়ত এগুলোতেই ভিড় করছেন। অনলাইনের মাধ্যমে আমানতও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমানতের সুদহারের সীমা বাড়ানোর পর ব্যাংকগুলোতে আমানতের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তবে ঋণের চাহিদা না থাকায় এবং ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ কমে আসায় ভালো ব্যাংকগুলো এখন আগ্রাসীভাবে সুদ বাড়াচ্ছে না।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর জানুয়ারি–মে মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি আমানত বেড়েছে ব্র্যাক ব্যাংকে। এ সময়ে ব্যাংকের আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকায়। ইসলামী ব্যাংক, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), পূবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও ঢাকা ব্যাংকের আমানতও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি তারেক রেফাত উল্লাহ খান জানান, কিছু ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে মানুষ আস্থার ব্যাংকগুলোতে আসছেন। ব্র্যাক ব্যাংককে দেশের আস্থার শীর্ষে রাখা হয়েছে। শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সারা দেশে সেবা পৌঁছে দেয়ার ফলে আমানত বেড়েছে। ইসলামী ব্যাংকের এমডি ওমর ফারুক খাঁন বলেন, সরকার বদলের পর থেকে অনিয়ম বন্ধ হওয়ার কারণে গ্রাহকের আস্থা ফিরে এসেছে।

ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন জানিয়েছেন, নতুন উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং সম্প্রসারণের মাধ্যমে সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ায় আমানত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউসিবি, পূবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও ঢাকা ব্যাংকেও এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান মাসরুর আরেফিন বলেন, প্রশ্নের মুখে পড়া ব্যাংক থেকে মানুষ ভালো ব্যাংকের দিকে আসছে। এছাড়া সুদের হারের বৃদ্ধি ও দখলমুক্ত ব্যাংকের প্রভাবও আমানতের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

সংক্ষেপে, ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি ও শাখা নেটওয়ার্কের প্রভাব, অনিয়ম বন্ধ হওয়া, সরকারি-বেসরকারি সেবার মান বৃদ্ধির কারণে গ্রাহকের আস্থা ফিরে আসায় ভালো ব্যাংকগুলোতে আমানত উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।