বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন

প্রতিবেদক: বেসরকারি খাতের প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার এক চিঠির মাধ্যমে ব্যাংকটিকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিষয়টি  নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, আশা করছি, নতুন পরিচালনা পর্ষদ ভালো করবে।

নতুন পর্ষদে রয়েছেন একজন শেয়ারধারী পরিচালক ও পাঁচজন স্বতন্ত্র পরিচালক। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এইচ বি এম ইকবালের পরিবারের সদস্যরা ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে বাদ পড়লেন।

নতুন পর্ষদে শেয়ারধারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন উদ্যোক্তা শেয়ারধারী আরিফুর রহমান, যিনি তিন দশকের বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন—

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. ফোরকান হোসেন।ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ফরিদুল ইসলাম।ব্যাংক এশিয়ার সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর অধ্যাপক শেখ মোর্শেদ জাহান।চার্টার্ড সেক্রেটারি এম নুরুল আলম (শর্তসাপেক্ষে প্রাইম ইনস্যুরেন্সের স্বতন্ত্র পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করে)।

১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন এইচ বি এম ইকবাল। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি চেয়ারম্যান পদ ছাড়েন। একই সময়ে তাঁর ছেলে মঈন ইকবাল ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিচালক পদ থেকেও পদত্যাগ করেন। এরপরও ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তাঁর আরেক ছেলে মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল।

তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জব্দ করা ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলনের ঘটনায় সমালোচনা ওঠে। জানা গেছে, প্রিমিয়ার ব্যাংক নিজেই ইকবালকে এই সুযোগ করে দেয়। এর জের ধরেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক শেষ পর্যন্ত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের মালিকানার পাশাপাশি এইচ বি এম ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে প্রিমিয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গ্রুপটির অধীনে রয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল, রেস্তোরাঁ, সিমেন্ট উৎপাদন, মেডিকেল সেন্টারসহ বিভিন্ন ব্যবসা। এছাড়া তিনি দেশে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠা করেছেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘ সময় প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকা এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ইকবালের নাম বহুবার আলোচনায় এসেছে। নতুন পর্ষদ গঠনের মধ্য দিয়ে কার্যত ইকবাল পরিবারের দীর্ঘ প্রভাবের অবসান ঘটল প্রিমিয়ার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায়।