
প্রতিবেদক: বিশ্বখ্যাত বিলাসপণ্য ব্র্যান্ড কেরিং বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আশঙ্কার চেয়েও খারাপ আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করেছে। এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমে ৩৭০ কোটি ইউরোতে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা অনুমান করেছিল বিক্রি হবে প্রায় ৩৯৬ কোটি ইউরো।
কেরিংয়ের মোট আয়ের প্রায় অর্ধেক আসে গুচি থেকে। কিন্তু এ প্রান্তিকে গুচির বিক্রি ২৫ শতাংশ কমে ১৪৬ কোটি ইউরোতে নেমে এসেছে। কেরিংয়ের প্রধান নির্বাহী ফ্রাঁসোয়া-অঁরি পিনো এই ফলাফলকে হতাশাজনক হিসেবে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি এবং গত দুই বছরের পরিশ্রম ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য শক্ত ভিত গড়ে দিয়েছে।
কোম্পানির বার্তা অনুযায়ী, অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও তারা দীর্ঘমেয়াদি লাভজনক প্রবৃদ্ধির কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে। কেরিং গুচি ছাড়াও সেন্ট লরঁ, বোত্তেগা ভেনেতা সহ একাধিক নামকরা ব্র্যান্ডের মালিক। তবে এবারে বিক্রি কমেছে সব বাজারেই, বিশেষ করে জাপান ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল।
থার্ড ব্রিজের বিশ্লেষক ইয়ানমেই ট্যাং উল্লেখ করেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র—কোম্পানির দুই প্রধান বিলাসবাজার এখন চাপের মধ্যে।
বেচাকেনা দুর্বল থাকার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে কেরিং পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না। চলতি বছরে কোম্পানির শেয়ারমূল্য ইতিমধ্যে ৮ শতাংশ কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে জুন মাসে নতুন গ্রুপ সিইও হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন গাড়িশিল্পের অভিজ্ঞ নির্বাহী লুকা দে মেও, যিনি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
বারক্লেসের প্রধান ক্যারোল মাদজো মন্তব্য করেছেন, দে মেওয়ের ইতিবাচক রেকর্ড কেরিং পুনর্গঠন ও ব্র্যান্ড গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা এবং চীনে ভোক্তা ব্যয় কমার আশঙ্কা নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে।
কেরিংয়ের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আর্মেল পুলু জানিয়েছেন, শুল্কের প্রভাব মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে সামাল দেওয়া সম্ভব। দ্বিতীয় প্রান্তিকেই কিছু পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে, এবং শরৎকালে প্রয়োজন অনুযায়ী আরও দাম সমন্বয় করা হতে পারে।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, কেরিংয়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার। নতুন শিল্পনির্দেশক দেমনা গভাসালিয়ার হাত ধরে গুচির নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম ঝলক দেখা যাবে সেপ্টেম্বর মাসে, এবং পূর্ণাঙ্গ সংযোজন আসবে ২০২৬ সালের শুরুতে।
বারক্লেসের মাদজো বলেন,নতুনত্ব আনলেই গুচি আবার শীর্ষে উঠতে পারবে। অভিনব পণ্য—যেমন আগে দেখা যায়নি—তৈরি করাই এখন মূল চাবিকাঠি।