স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ, তবে সরবরাহ কমেনি

প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সরকার চলতি বছরের এপ্রিল মাসে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করে। তবে বিধিনিষেধের পরও ভারত থেকে সুতা আমদানি মাত্র সামান্যই কমেছে, কারণ স্থলবন্দর বন্ধ হওয়ার পর সমুদ্রবন্দর ব্যবহার শুরু হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, স্থলবন্দর বন্ধ হওয়ার আগে প্রতি মাসে গড়ে ৫ কোটি কেজি সুতা আসত। বিধিনিষেধের পর মে ও জুনে তা কমে গড়ে ৪ কোটি কেজি, জুলাইয়ে আবার ৫ কোটি কেজির বেশি হয়েছে। স্থলবন্দর দিয়ে আগে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে সূক্ষ্ম ৩০ কাউন্টের সুতার চালানে ৮০ কাউন্ট সুতা আনা হতো, যা স্থানীয় মিলগুলোর জন্য লোকসানের কারণ ছিল।

মার্চের শেষের দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়।

১৫ এপ্রিল বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী সীমান্তে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর।

ভারতের কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও গুজরাট থেকে বাংলাদেশে সুতা আসে।

চলতি বছরের জানুয়ারি–জুলাই মাসে মোট ৭২ কোটি কেজি সুতা আমদানি হয়েছে, যার খরচ হয়েছে ২২০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ভারত থেকে এসেছে ৪৭ শতাংশ (৩৪ কোটি কেজি) এবং চীন থেকে ৩৮ শতাংশ (২৭ কোটি ৬১ লাখ কেজি)।

স্থলবন্দর বন্ধের পর বাজারে ভারতীয় উচ্চ কাউন্টের সুতা কমে যাওয়ায় স্থানীয় স্পিনিং মিলের বিক্রি বেড়েছে।

দেশে বর্তমানে ৫১৯টি স্পিনিং মিল রয়েছে, যা নিট কাপড়ের ৮৫–৯০ শতাংশ এবং ওভেন কাপড়ের প্রায় ৪০ শতাংশ সুতা সরবরাহ করে।

স্থলবন্দর বন্ধের পর ভারত থেকে সমুদ্রপথে সুতা আনা দীর্ঘ সময় নিচ্ছে (২০–২৫ দিন)।

ভারতের সুতা কেজিতে ২০–৩০ সেন্ট কম দামে আসে, ফলে বাংলাদেশি মিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা কঠিন হয়ে গেছে।

গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশীয় সুতার উৎপাদন খরচ বাড়িয়েছে।

বস্ত্রকল মালিকেরা দাবি করেন, স্থলবন্দর থেকে আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি। তারা শুধু চান, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে উচ্চ কাউন্টের সুতা আমদানি বন্ধ হোক, যাতে দেশীয় মিলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।