
প্রতিবেদক: এ দেশে মানুষকে সংসার চালাতে আয়ের অর্ধেকের বেশি খরচ করতে হয়। একটি পরিবারের মাসিক খরচের প্রায় ৫৫ শতাংশই চলে যায় চাল, ডাল, তেল–নুন, মাছ–মাংস ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য কিনতে। গরিব পরিবারের জন্য এই খরচ আরও বেশি হতে পারে, ৬০–৭০ শতাংশ পর্যন্ত। বাকি খরচ হয় বাড়িভাড়া, শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত ও অন্যান্য খাতে।
গত সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানে গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। বিশেষ করে গত বছরের জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশের ওপরে ওঠে, যা এক যুগে সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাব অনুসারে একজন ভোক্তার মাসিক খরচের ৪৭–৪৮ শতাংশই খাদ্যে যায়। তবে পিপিআরসির গবেষণা দেখিয়েছে, সাধারণ মানুষের আসল খরচ সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি, যা সংসার পরিচালনায় আয়ের চাপ আরও বাড়িয়েছে।
একটি পরিবারের মাসিক খরচের বিস্তারিত বিবেচনায় দেখা গেছে, খাদ্যপণ্য খাতে খরচ হয় ১০ হাজার ৬১৪ টাকা, শিক্ষা খাতে ১ হাজার ৮২২ টাকা, চিকিৎসায় ১ হাজার ৫৫৭ টাকা, যাতায়াতে ১ হাজার ৪৭৮ টাকা, বাড়িভাড়া ১ হাজার ৯০ টাকা, পরিষেবা খাতে ৮৫৩ টাকা, জ্বালানি খাতে ৭০৯ টাকা, টয়লেট্রিজে ৭০৭ টাকা, অভ্যাসগত চাহিদায় ৬৬৪ টাকা, গণমাধ্যম ও গণযোগাযোগে ৬৪৩ টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৬৮৯ টাকা।
তিন বছরের মধ্যে শহরের পরিবারের মাসিক আয় কমেছে, কিন্তু খরচ বেড়েছে। বর্তমানে শহরের একটি পরিবারের মাসিক গড় আয় ৪০ হাজার ৫৭৮ টাকা, খরচ ৪৪ হাজার ৯৬১ টাকা। ২০২২ সালে এই আয় ছিল ৪৫ হাজার ৫৭৮ টাকা। অন্যদিকে গ্রামের পরিবারের আয় সামান্য বেড়েছে; মাসিক আয় এখন ২৯ হাজার ২০৫ টাকা, খরচ ২৭ হাজার ১৬২ টাকা। গবেষণাটি দেশের গড় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও পরিবারগুলোর আয়ের তুলনায় খরচের চিত্র পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছে।