
প্রতিবেদক: যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ভোজগাতী গ্রামের কৃষক শেখ রাসেল উদ্দীন গত বছর আড়াই বিঘা জমিতে ৩২ মণ পাট পেয়েছিলেন। সেই পাট তিনি মজুত করে মৌসুম শেষে ৩ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেন। এবারও একই পরিমাণ জমিতে পাট চাষ করেছেন। এতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে পাটকাঠি বিক্রি করেই তিনি ৩৭ হাজার টাকা পেয়েছেন। এ বছর ফলন হয়েছে ৩১ মণ। বাজারদর অনুযায়ী এখনই বিক্রি করলে লাখ টাকা আয় সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
রাসেল উদ্দীন বলেন, ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। বাজারে দামও ভালো। দাম আরও বাড়তে পারে—তাই পাট শুকিয়ে গাঁট বেঁধে রেখে দিচ্ছি। পাটের ফলন ও পাটকাঠির দামে আমি খুশি।
বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ পাট মানভেদে ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি পাটকাঠিও বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা গ্রামের কৃষক ইকবাল কবির জানান, এ বছর ৮৮ শতক জমিতে ৩০ মণ পাট পেয়েছেন। ইতিমধ্যে পাটকাঠি বিক্রি করে পেয়েছেন ২৬ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ‘নদীতে পাট জাগ দেওয়ায় রং ও মান ভালো হয়েছে। এখন বাজারে ভালো পাটের দাম ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকা। খরচ বাদে এবার ভালো লাভ হবে।’
কৃষকেরা জানান, মৌসুমের শুরুতে খরা থাকলেও পরে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় গাছ ভালো হয়েছে। কাটার সময় আবার বেশি বৃষ্টি থাকায় জাগ দেওয়ার সুবিধা হয়েছে। কাছাকাছি জলাশয়ে জাগ দেওয়ায় পরিবহন ব্যয়ও কম পড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যশোরে পাট আবাদ বেড়েছে।২০২৩ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার হেক্টর, আবাদ হয়েছিল ২৫ হাজার ৪০০ হেক্টরে।২০২৪ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার হেক্টর, আবাদ হয়েছিল ২৩ হাজার ৫৫০ হেক্টরে।
চলতি ২০২৫ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৪ হাজার ২২০ হেক্টর, আর আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৩৪০ হেক্টরে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এবার পাটের ফলন ভালো হয়েছে। বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় চাষিরা সহজে জাগ দিতে পেরেছেন। এতে মান ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই দাম ভালো। পাটকাঠিও ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।’