
প্রতিবেদক: দুই বছর আগে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু করে সরকার। ধীরে ধীরে এই স্কিমটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অবসর জীবনে আর্থিক সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে চালু হওয়া এ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৬ হাজার গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন।
বর্তমানে ২৪টি ব্যাংকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম করা যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আইএফআইসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংক। সম্প্রতি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আরও ১৭টি ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করেছে। ফলে এমওইউ করা ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল ৪১। শিগগিরই নতুন এসব ব্যাংকও সেবা চালু করবে।
এসব ব্যাংক গ্রাহকদের নিবন্ধন ও চাঁদা সংগ্রহে সহযোগিতা করবে। শুধু শাখার মাধ্যমেই নয়, ব্যাংকের নির্ধারিত মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেও গ্রাহকেরা অনলাইনে নিবন্ধন ও চাঁদা পরিশোধ করতে পারবেন। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, এমওইউ করা সব ব্যাংক এখনও সেবা চালু করতে পারেনি। কয়েকটি ব্যাংক সময় চেয়েছে, প্রক্রিয়া চলছে।
বর্তমানে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে চার ধরনের স্কিম চালু আছে—প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাস। কর্মজীবী, অনিয়মিত আয়ের মানুষ ও প্রবাসীরা এই স্কিমের আওতায় আসতে পারছেন। প্রায় ১০ কোটি মানুষের কথা বিবেচনা করেই এ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।
সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হতে হলে ইউপেনশন ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। প্রথমে প্রত্যয়ন পাতায় সম্মতি দিতে হবে, যেখানে ঘোষণা করতে হবে যে আবেদনকারী সরকারি বা আধা সরকারি চাকরিতে নেই এবং কোনো সরকারি ভাতা গ্রহণ করছেন না। এরপর চারটি স্কিমের মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে। আবেদনকারীর এনআইডি, জন্মতারিখ, মুঠোফোন নম্বর ও ই-মেইল দিতে হবে। তারপর একটি ওটিপি নম্বর ফোন ও ই-মেইলে পাঠানো হবে, যা দিয়ে পরবর্তী ধাপে প্রবেশ করতে হবে।
নিবন্ধনের সময় ব্যক্তিগত তথ্য (এনআইডি থেকে আসা নাম, ঠিকানা, ছবি ইত্যাদি) স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে। তবে আবেদনকারীকে বার্ষিক আয়, পেশা, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন করতে হবে। এরপর মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক চাঁদা বেছে নিয়ে ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে হবে। সর্বশেষে নমিনি তথ্য (জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ, সম্পর্ক, ফোন নম্বর ও প্রাপ্যতার হারসহ) যুক্ত করতে হবে। সবশেষ ধাপে পূরণ করা তথ্য যাচাই করে সম্মতি দিলে নিবন্ধন সম্পন্ন হবে।