সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ঋণের সুযোগ চালু

প্রতিবেদক: জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা হওয়া টাকার ভিত্তিতে গ্রাহক এখন ঋণ নিতে পারছেন। ঋণের জন্য আবেদন করতে হয় অনলাইনে, এবং আবেদন মঞ্জুর হলে ঋণের টাকা গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবেই চলে যায়। এই সেবা এক মাস আগে চালু হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার পর্যন্ত মোট ৯২টি আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে ১১টি আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে।

ঋণের আবেদন করতে হলে নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ থাকতে হবে। ঋণটি দুই বছরে মোট ২৪ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। শেষ কিস্তির সঙ্গে ২ শতাংশ সেবা মাশুল কেটে রাখা হয়, যা পেনশন কর্তৃপক্ষের হাতে যায় না, বরং গ্রাহকের হিসাবেই জমা থাকে। এছাড়া, গ্রাহক কমপক্ষে এক লাখ টাকা জমা থাকলে তার হিসাব থেকে ঋণ নিতে পারবেন। ঋণের পরিমাণ জমার ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নেওয়া যাবে।

ঋণের জন্য আবেদন করা যায় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে (www.upension.gov.bd) লগইন করে। মেনুবার থেকে ‘ঋণের আবেদন’ বাটনে ক্লিক করলে আবেদন পেজ খোলে। এরপর ‘আবেদন করুন’ বাটনে ক্লিক করে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ ও কিস্তি সেট করার পর ‘আবেদন সম্পন্ন করুন’ বাটনে ক্লিক করলে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয়।

সদস্য গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, “ঋণের সুযোগ আগেও ছিল, তবে অনলাইনে আবেদন, মঞ্জুর ইত্যাদির পূর্ণ প্রস্তুতির পর এক মাস আগে থেকে সেবা চালু করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, আবেদন নিষ্পত্তির হার কম হওয়ার কারণ হলো, একজন কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করেন, আরেকজন অনুমোদন দেন। বর্তমানে তাঁরা বিদেশে প্রশিক্ষণে থাকায় প্রক্রিয়ায় ধীরগতি দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে মোট চারটি পরিকল্পনা চালু রয়েছে—প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাস। এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে চার লাখ গ্রাহক এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এই স্কিমের মাধ্যমে কর্মজীবী, অনিয়মিত আয়ের মানুষ ও প্রবাসীরা পেনশন সুবিধা পাচ্ছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখ, যা ২০৪১ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ৩ কোটি ১০ লাখে। তাঁদের কথা ভেবেই ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়। একই বছরের ১৩ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ‘ইউপেনশন’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন এবং স্কিমের প্রচার বাড়ানোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন।