
প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। না বুঝে বিনিয়োগ করলে বিপদের আশঙ্কা থাকে। একটি কোম্পানির শেয়ার কেনার আগে প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ না করলে ঝুঁকি আরও বাড়ে। তাই ভেবেচিন্তে বিনিয়োগ করলেই মুনাফার সুযোগ তৈরি হয়। এজন্য কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির শেয়ার কেনার আগে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা জরুরি।
প্রথমত, কোম্পানির সুনাম ও সুশাসন দেখতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম-নীতি মানে কি না, মালিকানা কাঠামো কেমন এবং ব্যবস্থাপনা কতটা পেশাদার—এসব বিষয় যাচাই করা জরুরি। পাশাপাশি আর্থিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠিত নিরীক্ষক দ্বারা অডিট করা কোম্পানির তথ্য সাধারণত নির্ভরযোগ্য হয়। অপরদিকে অখ্যাত নিরীক্ষক ব্যবহার করলে তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
দ্বিতীয়ত, শেয়ারের দাম কতটা যৌক্তিক, তা বোঝা জরুরি। এজন্য প্রাইস টু আর্নিং (পিই) রেশিও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে শুধু এক প্রান্তিকের ফলাফলের ওপর নির্ভর না করে অন্তত ৩ থেকে ৫ বছরের আয় ও এনএভি (নেট অ্যাসেট ভ্যালু) বিবেচনা করতে হবে।
তৃতীয়ত, কোম্পানির আয় প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখতে হবে। নিয়মিত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে আয় বাড়াতে পারা কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াটাও যৌক্তিক। তবে কোনো নির্দিষ্ট বছরে বেশি মুনাফা দেখে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। টেকসই মুনাফাই বিনিয়োগকারীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেটি লভ্যাংশের নিশ্চয়তা দেয়।
চতুর্থত, কোম্পানির লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা খেয়াল করা দরকার। পাশাপাশি শেয়ারের দাম বাড়লে মূলধনি মুনাফার সুযোগও তৈরি হয়।
পঞ্চমত, কোম্পানির ব্যবসা দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকবে কি না, সেটিও যাচাই করা উচিত। বাজারে তাদের অবস্থান, প্রতিযোগিতা মোকাবিলা এবং ভবিষ্যতে ব্যবসা সম্প্রসারণের সম্ভাবনা—এসব বিষয় ভেবে দেখা প্রয়োজন।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ মানেই ধৈর্য ধরা। দ্রুত লাভের আশায় হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। মূলনীতি হলো—কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করা। তাই যাচাই-বাছাই করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েই কোম্পানির শেয়ার কেনা সবচেয়ে নিরাপদ পথ।