
প্রতিবেদক: বাংলাদেশের আধুনিক খুচরা বিক্রয় খাতে নতুন এক যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। আলফামার্ট ট্রেডিং বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে ব্যবসা শুরু করছে। এটি ইন্দোনেশিয়া ও জাপানের যৌথ বিনিয়োগে গঠিত কোম্পানি, যেখানে স্থানীয় অংশীদার হিসেবে রয়েছে কাজী ফার্মস গ্রুপ, যারা হাঁস-মুরগি ও হিমায়িত খাদ্য বাজারজাত করে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজন করা অনুষ্ঠানে আলফামার্ট ট্রেডিং বাংলাদেশ লিমিটেডের যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। জানানো হয়, প্রকল্পটির প্রথম ধাপে ৫ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ থাকবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬১০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৭ কোটি ডলার (প্রায় ৮৫৪ কোটি টাকা) বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। মোট বিনিয়োগ দাঁড়াবে ১২ কোটি ডলার বা ১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা, যার বড় অংশ আসবে বিদেশ থেকে।
যৌথ উদ্যোগের অংশীদারদের মধ্যে রয়েছে আলফামার্ট, যা বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে প্রায় ৩০ হাজার স্টোর পরিচালনা করছে। আরেক অংশীদার মিৎসুবিশি করপোরেশনের রিটেইল শপ ‘সোগো শোশা’, যারা জাপান ও ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ১৭ হাজার স্টোর পরিচালনা করে। তারা ইউনিক্লোসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক রিটেইল চেইনেও বিনিয়োগ রেখেছে।
এই বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবহার করা হবে সর্বাধুনিক রিটেইল প্রযুক্তি। স্থানীয় ভোগ্যপণ্য উৎপাদকেরা দ্রুত পণ্য বিতরণের জন্য নতুন ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে। এছাড়া প্রাথমিক বিনিয়োগের মাধ্যমে সারা দেশে আধুনিক পণ্যভান্ডার (ওয়্যারহাউস) ও বিতরণকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই কয়েক হাজার দোকান চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে, যা দেশের খুচরা ব্যবসায় নতুন কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরির সুযোগ তৈরি করবে।
কাজী ফার্মস গ্রুপের পরিচালক কাজী জাহিন হাসান বলেন, “আলফামার্টের মাধ্যমে আমরা ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করব।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, এছাড়া আলফামার্ট গ্রুপ ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধি বুদিয়ান্ত জোকো সুশান্ত, জাপানের মিত্সুবিশি করপোরেশনের প্রতিনিধি হিরোশি ওয়েগাকি, এবং আলফামার্ট বাংলাদেশের সিইও সাইফুল ইসলাম।
প্রাণ–আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে কাজী ফার্মসের ডিম ১০ লাখ দোকানে বিক্রি হয়। দেশের মানুষকে কম খরচে ডিম খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে কাজী ফার্মস। আশা করি, নতুন এই বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।”