ব্যবসায়ীদের আপত্তি উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম বন্দর নতুন মাশুল কার্যকর

প্রতিবেদক: ব্যবসায়ীদের আপত্তি উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন মাশুল কার্যকর করেছে। বুধবার প্রথম প্রহর থেকে, অর্থাৎ মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে বন্দরের সব সেবা খাতে নতুন মাশুল আদায় শুরু হয়েছে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর বন্দরের নতুন মাশুলের গেজেট প্রকাশ করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বন্দরের বিভিন্ন ধরনের সেবায় আগের তুলনায় গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কনটেইনার পরিবহনের মাশুল। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষিত হিসাব অনুযায়ী, প্রতিটি ২০ ফুট কনটেইনারে গড়ে প্রায় ৩৯ ডলার (প্রায় ৪ হাজার ৩৯৫ টাকা) অতিরিক্ত মাশুল ধরা হয়েছে।

এই বাড়তি মাশুলের বড় অংশ শিপিং লাইন থেকে আদায় করা হবে। আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকেরাও একাংশ পরিশোধ করবে। শিপিং লাইনগুলো তাদের অতিরিক্ত খরচ আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের ওপর চাপাবে, আর তারা পণ্যের দামে তা যুক্ত করবে। এতে খরচের প্রভাব পড়বে শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ওপর।

মাশুল বাড়ানো নিয়ে সরকারের ব্যাখ্যা হলো, ১৯৮৬ সালের পর বন্দরের মাশুল উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়নি। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে মাত্র পাঁচটি খাতে মাশুল সমন্বয় করা হয়েছিল। নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেই মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে, এবং তা এখনো বিশ্বের অনেক বন্দরের তুলনায় কম।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এভাবে মাশুল বাড়ানো হলে উৎপাদনমুখী শিল্প, ভোগ্যপণ্য ও বাণিজ্যিক পণ্যের ওপর ব্যাপক চাপ পড়বে। রপ্তানিমুখী পণ্যের ক্ষেত্রে দুই ধাপে অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হবে। সব মিলিয়ে এর বোঝা গিয়ে পড়বে সাধারণ ভোক্তার ওপর।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রথমে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মাশুল পরিশোধ করলেও শেষ পর্যন্ত তার প্রভাব পণ্যের দামের মাধ্যমে ভোক্তার ওপরই পড়বে। তাঁর ভাষায়, “ভোক্তারাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে।”