
প্রতিবেদক: রাজধানীর কল্যাণপুরের বাসিন্দা নাজমুল হাসান (ছদ্মনাম) একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। সীমিত আয়ে তাঁর প্রতি মাসের সংসার চলে টানাটানির মধ্যে। কীভাবে খরচ কমানো যায়, তা নিয়েই তাঁর সব সময়ের চিন্তা। কিন্তু কাঁচাবাজারে ঢুকলেই যেন সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তাই চলতি মাসের শুরুতে তিনি ঠিক করলেন—এবার খরচ কমাতেই হবে। তিনি তা পেরেছেনও।
বাজারে যাওয়ার আগে একবার ফ্রিজ আর রান্নাঘর দেখে নিন। কোন জিনিস আছে, কোনটা ফুরিয়ে গেছে তা চিহ্নিত করুন। তারপর একটি তালিকা তৈরি করুন। তালিকা অনুযায়ী কিনলে অপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা কমে যায় এবং বাজেটের মধ্যেই বাজার করা যায়।
প্রতি মাসে খাবারদাবারের জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট নির্ধারণ করে নিন। খুব প্রয়োজন না হলে সেই বাজেটের বাইরে যাবেন না। বাজেট থাকলে সহজ হয় সিদ্ধান্ত নিতে—কোন পণ্য এখন জরুরি, আর কোনটি পরে কেনা যায়। বাজেট অনুযায়ী না পেলে পাশের আরেকটি দোকান দেখলে অনেক সময় কম দামে পণ্য মিলতে পারে।
মৌসুমে শাকসবজি, ফলমূল, মাছের সরবরাহ বেশি থাকে এবং দামও তুলনামূলক কম থাকে। যেমন শীতকালে ফুলকপি বা টমেটো, গ্রীষ্মে পুঁইশাক বা বরবটি সহজলভ্য হয়। মৌসুমি পণ্য কিনলে খরচ কমে এবং মানও ভালো পাওয়া যায়।
চাল, ডাল, তেল, মসলা এসব দীর্ঘস্থায়ী পণ্য বড় প্যাকেটে বা পাইকারি দরে কিনলে খরচ কমে। তবে বেশি কিনে ফেললে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সংরক্ষণের জায়গা ও ব্যবস্থার দিকেও খেয়াল রাখুন।
একই পণ্যের দাম দোকানভেদে ভিন্ন হতে পারে। বাজারভেদেও পার্থক্য থাকে। তাই আগে একটু খোঁজ নিলে বোঝা যায় কোথায় একই মানের পণ্য কম দামে পাওয়া যায়। দাম জেনে গেলে দর-কষাকষিও সহজ হয়।
সকালে বাজারে গেলে পণ্য টাটকা থাকে এবং অনেক বিক্রেতা তুলনামূলক কম দাম রাখেন। আবার দিনের শেষে পচনশীল পণ্য অনেকে কম দামে বিক্রি করে দেন। সময় থাকলে এসব সময়ে বাজার করলে খরচ কমানো যায়।
পাড়ার দোকানে সাধারণত ছাড়ের সুযোগ কম। কিন্তু সুপারশপ বা অনলাইন বাজারে প্রায়ই ‘বাই ওয়ান, গেট ওয়ান’ বা বিশেষ ছাড় থাকে। এসব অফার কাজে লাগালে খরচ বাঁচে।
অপচয় এড়াতে পরিমিত কেনাকাটা করুন। ফ্রিজে কীভাবে মাছ, মাংস, সবজি বা ফলমূল সংরক্ষণ করতে হয়, তা জেনে নিন। অযথা বেশি কিনে নষ্ট করলে তা বাড়তি খরচের কারণ হয়। প্রতিদিন কতটুকু পণ্য খরচ হয়, সে ধারণা রাখুন। আবার বাজারমূল্য ওঠানামা করে বলে বেশি দামে বেশি কিনলে ক্ষতি হতে পারে।
যতটা প্রয়োজন, ততটাই কেনার অভ্যাস করলে স্বাভাবিক ভাবেই খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকে।